টাকার পরিমাণে টালিগঞ্জকে টেক্কা বেলঘরিয়ার। অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বেলঘরিয়ার রথতলার অভিজাত আবাসন থেকে উদ্ধার ২৭ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। হদিশ মিলেছে ৪ কোটি ৩১ লক্ষ টাকার সোনা। শোওয়ার ঘর, শৌচাগারে তল্লাশি চালিয়ে খোঁজ মিলেছে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা ও সোনা। ১০টি ট্রাঙ্ক বোঝাই করে টাকা নিয়ে বেরোন ইডি আধিকারিকরা। এদিকে, মন্ত্রীর আপ্তসহায়ক সুকান্ত আচার্যকে আজই তলব করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
বেলঘরিয়ার রথতলায় অভিজাত আবাসন ক্লাবটাউন হাইটসে দু’টি ফ্ল্যাট ছিল অর্পিতার। একটি ব্লক ২ এবং অপরটি ব্লক ৫-এ। বুধবার বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ ওই ফ্ল্যাটে হানা দেন ইডি আধিকারিকরা। বাধ্য হয়ে তালা ভাঙা হয়। সন্ধের দিকে জানা যায় অর্পিতার ফ্ল্যাটে রয়েছে যখের ধন! খবর দেওয়া হয় ব্যাংক আধিকারিকদের। টাকা গোনার চারটি অত্যাধুনিক মেশিন নিয়ে অর্পিতার ফ্ল্যাটে পৌঁছন তাঁরা।
ইডি সূত্রে খবর, অর্পিতার ফ্ল্যাটের বেডরুমের ওয়াড্রব এবং শৌচাগার থেকে উদ্ধার বান্ডিল বান্ডিল টাকার নোট। প্রায় ১৯ ঘণ্টা ধরে চলে টাকা গোনার কাজ। ভোর চারটে নাগাদ শেষ হয় টাকা গোনার প্রক্রিয়া।
ইডি সূত্রে শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে নগদ ২৭ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে। এছাড়া ৪ কোটি ৩১ লক্ষ টাকার সোনার হদিশ মিলেছে। মুঠো মুঠো রুপোর কয়েন, একাধিক দলিল বাজেয়াপ্ত করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ১০টি ট্রাঙ্কে করে বাজেয়াপ্ত হওয়া নগদ টাকা, সোনা, রুপোর কয়েন নিয়ে যান ইডি আধিকারিকরা।
উল্লেখ্য, এর আগে ২২ জুলাই, টালিগঞ্জের অভিজাত আবাসন ডায়মন্ড সিটি সাউথে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে ২১ কোটি ৮০ লক্ষ নগদ টাকা উদ্ধার করেন ইডি আধিকারিকরা। এখনও পর্যন্ত মোট প্রায় ৫০ কোটি নগদ টাকার খোঁজ পেয়েছেন তদন্তকারীরা।
বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় একাধিক প্রশ্নের ভিড়। প্রশ্ন উঠছে, কোটি কোটি নগদ টাকার মালকিন কি একাই অর্পিতা? নাকি তাঁর ফ্ল্যাটে সঞ্চিত টাকার মালিক অন্য কেউ?
যদিও ইডি সূত্রে খবর, জেরায় অর্পিতা দাবি করেছেন এই বিপুল টাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মন্ত্রী নাকি তাঁর ফ্ল্যাটকে ‘মিনি ব্যাংক‘ হিসাবে কাজে লাগিয়েছেন। তবে সেক্ষেত্রে অর্পিতা মন্ত্রীকে কেন সে সুযোগ দিয়েছিল, সে প্রশ্ন থেকেই যায়।
এদিকে, ফের নগদ টাকা উদ্ধারের ফলে নতুন করে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। টুইটে শাসকদলকে খোঁচা দিয়েছেন একের পর এক রাজ্য বিজেপি নেতা। এই ঘটনাকে দুঃখজনক বলেই পালটা ব্যাখ্যা করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি আরও বলেন, লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে।
Be the first to comment