আবারও মুখ খুললেন নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রবিবার স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানোর জন্য পার্থকে জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় ৷ সেখানেই গাড়ি থেকে নামার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রাজ্য়ের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমার কোনও টাকা নেই অর্থাৎ অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায়ের দু’টি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া নগদ প্রায় ৫০ কোটি টাকা যে তাঁর নয়, এদিন কার্যত সেই দাবিই করেছেন পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় ৷ তাহলে এই বিপুল অর্থের আসল মালিক কে? সেই প্রশ্নের অবশ্য কোনও উত্তর দেননি এই প্রবীণ রাজনীতিক ৷ শুধু জানিয়েছেন, ষড়যন্ত্রকারী কারা, তা সঠিক সময় এলেই জানা যাবে !
প্রসঙ্গত, পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়কে গত ২৩ জুলাই গ্রেফতার করে ইডি ৷ তারপর থেকে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন তিনি ৷ তাঁকে নিয়ে রাজ্য়ের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের অবস্থান ঠিক কী হবে, প্রাথমিকভাবে তা নিয়েও দোলাচল ছিল ৷ কিন্তু, পরবর্তীতে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ প্রশ্ন তোলেন, সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলার সুযোগ পেয়েও কেন পার্থ নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করতে পারছেন না? উপরন্তু, পার্থ তাঁর অ্য়ারেস্ট মেমোয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নাম ও মোবাইল নম্বর দেওয়া চটে যায় তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব ৷
এই প্রেক্ষাপটে পার্থকে তাঁর সমস্ত দলীয় পদ থেকে অপসারিত করে রাজ্যের শাসকদল ৷ পার্থর হাতে থাকা রাজ্যের তিনটি দফতরও ফেরত নিয়ে নেওয়া হয় ৷ তাৎপর্যপূর্ণভাবে, আনুষ্ঠানিকভাবে পদ হারানোর পরই প্রথম মুখ খোলেন পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় ৷ গত শুক্রবার তাঁকে যখন জোকা ইএসআই হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য আনা হয়েছিল, তখনই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পার্থ জানান, তিনি ‘ষড়যন্ত্রের শিকার’ ! এরপর রবিবার ফের একই কারণে পার্থকে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছে যান ইডি আধিকারিকরা ৷ আর এদিন পার্থ বলেন, আমার কোনও টাকা নেই ! তাহলে তাঁরই ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতার দু’টি ফ্ল্য়াট থেকে উদ্ধার হওয়া ওই রাশি রাশি টাকা আদতে কার?
এদিকে, ইডি সূত্রে খবর, জেরায় গোয়েন্দাদের অর্পিতা জানিয়েছেন, তাঁর নামে থাকা ফ্ল্য়াট থেকে টাকা, সোনা উদ্ধার হলেও সেসবে তাঁর কোনও অধিকার ছিল না ! ইতিমধ্যেই পার্থ-অর্পিতার যৌথ মালিকানায় কেনা বিভিন্ন সম্পত্তির হদিশ মিলতে শুরু করেছে ৷ যেগুলি পরবর্তীতে শুধুমাত্র অর্পিতার নামে ‘ট্রান্সফার’ করে দেওয়া হয় ! বিরোধীদের অভিযোগ, নিয়োগ দুর্নীতির বিপুল বহর দেখেই বোঝা যাচ্ছে, এত কাণ্ড পার্থ একা করেননি ৷ সিপিএম, বিজেপি নেতাদের একাংশ তো সরাসরি অভিযোগ করেছেন, এর সঙ্গে তৃণমূলের বিভিন্ন নেতা এবং রাজ্য মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরাও জড়িত রয়েছেন ! তাহলে কি তাঁদের সেই অভিযোগেই সায় দিলেন পার্থ? জানিয়ে দিলেন, উদ্ধার হওয়া ‘কুবেরের ধন’ আদতে তাঁর নয়? তার মালিক অন্য কেউ?
Be the first to comment