পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেপ্তারির দিনকয়েক পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফর নিয়ে একযোগে আক্রমণ শানিয়েছিল বিরোধীরা। দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন মমতা। সে সাক্ষাৎকে ‘সেটিং’য়ের আখ্যা দিয়েছিলেন সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি নেতারা। এবার তা নিয়েই বিরোধীদের কড়া জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, বকেয়া অর্থ না পেলে, একবার নয় হাজার বার দিল্লি যাবেন তিনি।
স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে রবিবার বেহালার ম্যান্টনে এক অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন মমতা। সেখানেই ‘সেটিং’ প্রসঙ্গে বিরোধীদের দিলেন জবাব। বলে দেন, অনেকে বলছে আমি সেটিং করতে দিল্লি গেছি। কেন যাব না? আমার ১০০ দিনের কাজের শ্রমিকরা ৭ মাস টাকা পায় না। এদের জন্য আমায় যেতে হলে হাজার বার যাব। এরপরই বিরোধীদের খোঁচা, যারা সেটিং বলছে, তোমাদের কংগ্রেস, সিএম যখন গেল, তখন সেটিং না? সীতারাম গেলে হয় না? কংগ্রেসশাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গেলে সেটিং হয় না? বিজেপির কাছে ভিক্ষা চাইতে আমি যাই না। নীতি আয়োগের মিটিংয়ে যাব না?
প্রসঙ্গত, এসএসসি দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এরপরই মমতার দিল্লি সফর নিয়ে খোঁচা দিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীরা বলেছিলেন, তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের কেন্দ্রীয় সংস্থার হাত থেকে রক্ষা করতেই মোদির দরবারে মমতা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এদিন পালটা দিয়ে জানিয়ে দিলেন, রাজ্যের প্রয়োজনে তিনি বারবার দিল্লি যাবেন।
এরপরই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি। একের পর এক তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে যেভাবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি, তা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। তাঁর দাবি, অন্যায় করলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই পদক্ষেপ করা উচিত। কিন্তু সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি ছেড়ে শুধুমাত্র একপেশেভাবে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদেরই। এতেই ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর প্রশ্ন, সীতারামকে নোটিস পাঠানো হয়েছে? ১৭ লক্ষ টাকা জমা করেছিলেন প্যান কার্ড ছাড়া। সিপিএমের আমলেই সারদা কাণ্ড হয়েছিল। সুজন চক্রবর্তী ছিলেন তাদের নেতা। ক’টা নোটিস পাঠানো হয়েছে? মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের দাবি, তৃণমূলের সাফল্যে ভয় পেয়েই বিরোধীদের মুখ বন্ধ করতে এহেন আচরণ করছে বিজেপি সরকার। এই সরকার রাজনৈতিক স্বাধীনতার পরিপন্থী বলেও তোপ মমতার।
Be the first to comment