তিনি যে মা-মাটি-মানুষের মুখ্যমন্ত্রী, তা আরও একবার প্রমাণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেড রোডে যখন এক এক করে স্কুলের বাচ্চারা তাদের নাচগানের অনুষ্ঠান দেখাচ্ছে, তখন তালে তালে তালি দিচ্ছিলেন মমতা। কিন্তু, আদিবাসী শিল্পীরা যখন তাঁদের অনুষ্ঠান করছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর মূল মঞ্চের সামনে, তখন আর চুপ করে বসে থাকতে পারলেন না তিনি। আসন ছেড়ে উঠে মঞ্চের সিঁড়ির কয়েক ধাপ পেরিয়ে নেমে এলেন একেবারে মাটিতে। তালে তালে তাঁদের নাচে পা মেলালেন মুখ্যমন্ত্রীও। এই দৃশ্য দেখে উপস্থিত দর্শকরা হাততালি দিয়ে উঠলেন। মুখ্যমন্ত্রীও উপভোগ করলেন আনন্দের কয়েক মুহূর্ত।
এদিন তুমুল বৃষ্টি উপেক্ষা করে রেনকোট পরে রেড রোড নাচগানে মাতায় কচিকাঁচারা। সোমবার রাজ্য সরকারের আয়োজিত অনুষ্ঠানের মাঝেই ঝাঁপিয়ে আসে বৃষ্টি। পুলিশের কুচকাওয়াজের কিছুক্ষণ পরেই যখন স্কুলের বাচ্চাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হওয়ার কথা, তার মধ্যেই ব্যাঘাত ঘটাল বৃষ্টি। কিন্তু তাতেও দমানো যায়নি খুদে পড়ুয়াদের। রংবেরংয়ের সাজগোজের উপর দিয়েই স্বচ্ছ রেন কোট পরে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে তাদের নৃত্যগান করে দেখাল। মুগ্ধ মুখ্যমন্ত্রী তাদের উৎসাহ দেখে হাততালি দিয়ে আরও উৎসাহ জোগালেন। দর্শকরাও মুগ্ধ দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের এই অবিচল উদ্দীপনা দেখে।
স্বাধীনতার ৭৫ বছর উপলক্ষে রেড রোডে আয়োজিত কুচকাওয়াজের অনুষ্ঠানে এদিন উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমেই তিনি নেতাজি মূর্তি ও পুলিশ স্মারকবেদিতে মাল্যদান করেন। তারপর হেঁটে অনুষ্ঠান মঞ্চে পৌঁছান। হাঁটার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী পথের দুধারে থাকা অতিথি ও দর্শকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এদিনের অনুষ্ঠানে ছিল রাজ্য সরকারের একাধিক প্রকল্পসহ ১২টি ট্যাবলো। বিভিন্ন স্কুলের কচিকাঁচারা পরিবেশন করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ১১ জন পুলিশকর্মীকে পদক প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী। এর আগে সকালেই এক টুইটে দেশের মানুষকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মমতা।
রেড রোডে হেঁটে এসে অনুষ্ঠান মঞ্চের কাছে পুলিশের গার্ড অব অনার গ্রহণ করেন মমতা। পুলিশ ব্যান্ডে বেজে ওঠে জাতীয় সঙ্গীত। হেলিকপ্টারে করে পুষ্পবৃষ্টি করা হয়। তারপরেই শুরু হয় কুচকাওয়াজ। এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী উত্তর-পূর্ব ভারতে ধসে নিহত রাজ্যের ২১ জন সেনা জওয়ানের পরিবারের হাতে স্মারক ও অনুদান তুলে দেন। কর্মজীবনে অসামান্য অবদানের জন্য হাওড়ার পুলিশ কমিশনার মনোজ মালব্যকে পদক প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী।
Be the first to comment