২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে তৃতীয়বারে জন্য পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসার পর ত্রিপুরা জয়ের স্বপ্ন দেখেছিল তৃণমূল। রাতারাতি অন্যান্য বিরোধী দল থেকে বেশ কিছু নেতা-কর্মীকে তৃণমূলে যোগ দিতেও দেখা গিয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় পুর নির্বাচনে আশানুরূপ সাফল্য পায়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। এমনকী পুর নির্বাচনে জয়ী একমাত্র তৃণমূল কাউন্সিলরও বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। সুবল ভৌমিককে রাজ্য সভাপতি করে যাবতীয় রাজনৈতিক ঘুঁটি সাজাচ্ছিল বাংলার শাসকদল। সেই সুবলকে এদিন রাজ্য সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বেশ কিছুদিন ধরেই সুবলের বিজেপিতে যোগদানের খবর ছড়িয়ে পড়েছিল। এমনকী কয়েকদিন ধরে দলীয় কর্মসূচিতে তাঁকে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি। রাজ্য সভাপতি দলীয় কর্মসূচিতে অনুপস্থিত থাকায় স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের আগুন জ্বলছিল। এমনকী তৃণমূলের শীর্ষনেতৃত্ব সুবলের এই আচরণ ভালভাবে নেয়নি। দলীয় সূত্র খবর, বিজেপির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে, এই খবর স্পষ্ট হতেই তাঁকে রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। বুধবারই ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে এমনটাই জানানো হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, পরবর্তী সভাপতি না বেছে নেওয়া অবধি সে রাজ্য দলের যাবতীয় কাজ সামলাবেন সাংসদ সুস্মিতা দেব এবং দলের ইনচার্জ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
আগামী বছর ত্রিপুরাতে বিধানসভা নির্বাচন। তৃণমূল সূত্রে খবর, বিধানসভা নির্বাচনের আগে সুবল ভৌমিককে নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দানা বাঁধছিল। এমনকী তাঁর বিরুদ্ধে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। তাই আগেভাগেই পরিস্থিতি সামাল দিতে কড়া পদক্ষেপের পথে হেঁটেছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের জয়ের পর ত্রিপুরা নিয়ে আশাবাদী ছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের তরফে বিভিন্ন নেতাকে ত্রিপুরার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এমনকী দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিভিন্ন সময়ে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে গিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণও করেছিলেন। কোনওভাবেই আশাতীত সাফল্য পায়নি তৃণমূল। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল এই রাজ্য কোনও দাগ কাটতে পারে কি না, সেটাই এখন দেখার।
Be the first to comment