প্রাথমিক নিয়োগের দুর্নীতিতে নাম জড়ানোর পর প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হয়েছে। তাঁর বাড়িতেও হানা দিয়েছিল তদন্তকারী সংস্থা। তাঁর কোথায়, কত সম্পত্তি রয়েছে, তার হিসেব নিকেশ আদালতেও জমা দিতে হয়েছে। তবে আপাতত অদ্ভুতভাবে ‘উধাও’ মানিক। তাঁর ফোন বন্ধ, ফ্ল্যাটে নেই, বাড়িতেও নেই তিনি। এই অবস্থায় ঠিক কী ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে, সে ব্যাপারে আলোচনা করতেই কলকাতা হাইকোর্টে পৌঁছলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা। বৃহস্পতিবার সকালেই আধিকারিকরা হাইকোর্টে গিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন।
গত ১৫ অগস্ট মানিক ভট্টাচার্যকে তলব করেছিল ইডি। হাজিরা এড়িয়ে যান তিনি। এরপর থেকে তলব করলেও ইডি দফতরে যাননি মানিক ভট্টাচার্য। গত শুক্রবার তাঁকে বিধানসভায় দেখা গিয়েছিল বলে সূত্রের খবর। তারপর তিনি কোথায় গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সূত্রের খবর, নদিয়ায় মানিকের পৈতৃক বাড়িতে না গেলেও কল্যাণীর বিএসএফ ক্যাম্পে গিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা। সেখান থেকেই তাঁরা কলকাতা হাইকোর্টে যান। মানিককে না পাওয়া গেলে, লুক আউট নোটিস জারি করা হবে? নাকি অন্য কোনও কড়া পদক্ষেপ করা হবে? সে বিষয়ে এ দিন ইডি আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেছে বলে সূত্রের খবর।
নদিয়ায় রয়েছে মানিকের পৈতৃক বাড়ি। এ দিন সকালে দেখা যায়, সেই বাড়িতেও দরজায় তালা লাগানো। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন মাস খানেক আগেও ওই বাড়িতে ফিরেছিলেন মানিক। আশপাশের লোকজনের সঙ্গে তাঁর কথাও হয়েছিল। বাড়ির পরিচ্ছন্নতা বলে দিচ্ছে, কেউ ওই বাড়িতে বাস করেন। তবে আপাতত সে বাড়ি তালা বন্ধ।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে যখন মানিক ভট্টাচার্য হাজিরা দিয়েছিলেন। সেই সময় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর কলকাতায় একটি ফ্ল্যাট রয়েছে ও নদিয়ায় রয়েছে পৈতৃক বাড়ি। এ কথা শুনে বিচারপতি জানিয়েছিলেন, আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন কোনও সম্পত্তি পাওয়া গেলে, তা বাজেয়াপ্ত করা হবে। আর সেটা ফেরানোর আবেদনও করতে পারবেন না মানিক। তথ্য বলছে, ওই ঘটনার পর মানিক ভট্টাচার্য সিবিআই দফতরে হাজিরা দিয়েছেন, তবে ইডি দফতরে নোটিস পাওয়া সত্ত্বেও হাজিরা দেননি তিনি। ২৭ জুলাই শেষবার ইডি দফতরে হাজিরা দিয়েছিলেন তিনি। সে দিন তাঁকে ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।
Be the first to comment