আগে তো ওকে নোটিস ধরিয়েছে, ওর বউকেও নোটিস ধরিয়েছে। এবার না এমন হয়, ওর দু’বছরের বাচ্চাটাকে নোটিস ধরায়।” রাজ্যের সাম্প্রতিকতম নানান ইস্যুতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্ত নিয়ে আক্রমণ শানালেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমাবেশ একটা প্ল্যাটফর্ম। আর সেখান থেকে প্রথমেই দলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ইডি-সিবিআই তথা রাজ্যের প্রধান বিরোধী পক্ষ বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণের মঞ্চ তৈরি করেছিলেন। প্রথমে অভিষেকই ইডি-সিবিআই তদন্তের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান। আর তার রেশ থাকে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাতেও।
লক্ষ্য চব্বিশ। এই বার্তা নিয়ে বক্তৃতা রাখতে গিয়ে দলের যুব নেতা-নেত্রীদের মনোবল বাড়ানোর পাঠ পড়ান নেত্রী। স্বাভাবিকভাবে বাংলার বহুচর্চিত ইস্যু ইডি-সিবিআই তদন্ত নিয়ে আক্রমণ শানান তিনি। মমতা বলেন, এই সভায় একটু আগেই অভিষেক খুব ভাল বক্তৃতা দিয়েছে, আমার মন বলছে, ওকে কাল না নোটিস ধরায় আবার। আগে তো ওকে নোটিস ধরিয়েছে, ওর বউকেও নোটিস ধরিয়েছে। এবার বোধ হয় ২ বছরের বাচ্চাটাকেও নোটিস ধরাবে। এরপরই অভিষেকের উদ্দেশে বলে, যখন ডাকবে বাচ্চাটাকেও সঙ্গে করে নিয়ে যাস। ও দেখে রাখুক। যাতে আগামী দিনে ওরাও বুঝতে পারবে বাচ্চাটাও কেমন স্ট্রং।
প্রসঙ্গত, কয়লা পাচার কাণ্ডে একাধিকবার অভিষেক-রুজিরাকে ইডির সমনের মুখোমুখি হতে হয়েছে। এদিনের সভার পর আবারও অভিষেকের কাছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নোটিস আসতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। কথা প্রসঙ্গে তিনি টেনে আনেন ২১ জুলাইয়ের সভামঞ্চের কথা। তাঁর অভিযোগ. ২১ জুলাইয়ের সভার পরই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে ইডি পাঠানো হয়েছে । তাঁর কথায়, আগেও তো পার্থকে গ্রেফতার করতে পারত।” এর পিছনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা কাজ করছে। একই অভিযোগ অবশ্য করেছেন অভিষেকও।
ইডি- সিবিআই-কে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করার অভিযোগ আগেও করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনে আগে যেখানে পার্থ-অনুব্রত ইস্যুতে কিছুটা হলেও কোণঠাসা শাসকদল, সেখানে দলীয় কর্মীদের মনোবল বাড়াতে সেই ষড়যন্ত্রের তত্ত্বকেই খাঁড়া করেন তিনি। যদিও এটাও বারবার বলেছেন, “পার্থ যদি চোর হয়, আইন তার বিচার করবে। পার্থর দোষে আমায় টানবে কেন?” তিনি অভিযোগ করেছেন, ইবি, সিবিআই, সিআরপিএফ সবার দুর্নীতির লিস্ট রয়েছে।
তিনি এদিন আবারও বলেন, “আজও বলছি, দেশের মধ্যে সচ্চা কোনও পার্টি থেকে থাকলে, সেটা তৃণমূল পার্টি।” দল যে একটা ঝড়ের সম্মুখীন হয়েছে, তা কার্যত নেত্রীর কথাতেই এদিন বোঝা যায়। তিনি বলেন, “যখন ঝড় আসবে, ঝড়টা কিছুক্ষণ বাদেই সরে যাবে। তারপর কিন্তু আপনাদের আবার রাস্তায় নামতে হবে। আর ঝড়ের মধ্যে যারা রাস্তায় নামতে পারে, তারাই তো বীর, তারাই সৈনিক, তারাই যৌবন।” ছাত্রযুবদের মনোবল বাড়ানোর পাঠ পড়ান তিনি। সঙ্গে তৈরি করেন পঞ্চায়েতের লড়াইয়ের পিচ।
Be the first to comment