ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যু নিয়ে জট কাটতে না কাটতেই এবার আক্রান্ত আনিস খানের খুড়তুতো ভাই। শুক্রবার রাতে আনিসের ভাই সলমন খানের ওপর ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। আনিস-হত্যা মামলায় অন্যতম সাক্ষী এই সলমন। আনিসের মৃত্যুর পর পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন চলে, তার একেবারে প্রথম সারিতে ছিলেন সলমন। তাঁর ওপর এই ভয়াবহ আক্রমণের ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছে খান পরিবার। তাঁদের দাবি, নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হলেও কোনও লাভ হয়নি।
জানা গিয়েছে, বাড়িতে ঢুকে সলমনের ওপর আঘাত করে একদল দুষ্কৃতী। রাতের অন্ধকারে শৌচকর্ম করতে গিয়েছিলেন সলমন। সেই সময় কেউ বা কারা তাঁর ওপর অতর্কিতে আক্রমণ করে বলে অভিযোগ। মাথার পিছন দিক থেকে ক্রমাগত অস্ত্রের কোপ বসানোয় রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন সলমন। তাঁর স্ত্রী এসে সবাইকে ডাকাডাকি করেন। পরে সলমনকে আক্রান্ত অবস্থায় বাগনান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উলুবেরিয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন তিনি।
মাস কয়েক আগে আনিস খানের মৃত্যুতে আঙুল ওঠে পুলিশের দিকে। সিট গঠন করে তদন্তে শুরু করে পুলিশ। আনিসের বাবা জানিয়েছেন, আনিস হত্যা মামলার অন্যতম সাক্ষী সলমন। সেই রাতেই সলমনই আনিসকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটেছিলেন। সেই সাক্ষ্য লোপাট করার জন্য আক্রমণ করা হয়েছে বলে দাবি আনিসের বাবার। আনিসের দাদা জানিয়েছেন, নিরাপত্তার অভাবের কথা জানিয়ে আমতা থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছিল পরিবারের তরফে। তারপরও সলমনের ওপর এই আক্রমণ কী ভাবে ঘটল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। স্থানীয় নেতা হাঁসু খাঁ ও তাঁর লোকজনের বিরুদ্ধে মূলত অভিযোগ জানাচ্ছে খান পরিবার।
পরিবারের অভিযোগ, আনিস মৃত্যুর অন্যতম প্রধান সাক্ষী হওয়ায় বারবার হুমকির সম্মুখীন হতে হয়েছে সলমনকে। পুলিশে দু’বার এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ জানানোও হয়েছিল। আনিসের দাদা বলেন, আগেই বলেছিলাম ভয় আছে। অভিযোগও করা হয়েছিল আগেই। থানা থেকে কিছুদিন তিনজন পুলিশকর্মীকে বসিয়ে রাখা হলেও বর্তমানে তাঁরা নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছেন বলেই দাবি আনিসের দাদার। এ দিন সলমনের ওপর আক্রমণের পর ফের একবার সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে পরিবারের তরফে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয় আনিস খানের। সেই রাতেই আনিসের বাড়িতে গিয়েছিল পুলিশ। তাই আনিসের মৃত্যু স্বাভাবিক নাকি খুন, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হয়েছিল পরিবারের তরফে। আদালতের সিঙ্গল বেঞ্চ সেই আবেদন খারিজ করে দেয় ও সিটের তদন্তে ভরসা রাখে। রাজ্য পুলিশের সিট রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছে, আনিসকে খুন করা হয়নি।
Be the first to comment