জয়দীপ মৈত্র,দক্ষিন দিনাজপুর
দক্ষিন দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর বিধানসভার অন্তর্গত নন্দনপুর ভৌমিক বাড়ির দুর্গা মা ৫৫১ বছর ধরে পুজিত হয়ে আসছেন। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর ব্লকের নন্দনপুর ঠেঙ্গাপাড়া এলাকার ভৌমিক বাড়ির পুজো ৫৫১ বছরের পুরনো।
জানা গিয়েছে, এই নন্দনপুরের বাসিন্দা স্বর্গীয় সত্য ভৌমিক ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে চলে আসেন যা পরবর্তীতে পাকিস্তান ভারতের কাছে হেরে যাওয়ার পর পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীনতা লাভ করে এবং নতুন ভাবে নামকরণ হয় সে দেশের নাম রাখা হয় বাংলাদেশ। কিন্তু তার আত্মীয়স্বজন এখনও বাংলাদেশেই রয়েছে সেখানেই ঢাকা জেলার বরংগাইলের ভৌমিক বাড়ির মা দুর্গা প্রায় ৫৫১ বছর ধরে পুজো হয়ে আসছেন।
যেহেতু বাংলাদেশে পারিবারিক দুর্গাপূজা হয় সেহেতু ভারতে এসে ভৌমিক বাড়ির সদস্যরা নতুন করে দুর্গাপূজা শুরু করেননি। কিন্তু আট দশ বছর আগে স্বপ্নাদেশে পুনরায় ঠেঙ্গাপাড়া নন্দনপুর এলাকায় পুজো শুরু করেন ভৌমিক সদস্যরা। সেই পুজো বাংলাদেশের মতো কলেবরে বৃহৎ না হলেও নিয়মনিষ্ঠা আচার অনুষ্ঠানে অনেক বনেদি বাড়ির পুজো কে হার মানায়। এখানে দেবী দূর্গা মা বৈষ্ণব মতেই পুজিত হন। ফলমূল সহযোগে মাকে ভোগ নিবেদন করা হয়।
পরিবারের সদস্য সমিরন ভৌমিক জানালেন, “আমাদের এই পুজো ৫৫১ বছরের পুরনো। আমার বাবা পূর্ব পাকিস্তান থেকে ভারতে চলে আসার পর যেহেতু বাংলাদেশে বরংগাইলে এখনও অন্যান্য আত্মীয়রা পুজো করেন সেই কারণে এপারে নতুন করে পুজো শুরু করেননি। কিন্তু আট দশ বছর আগে মা দুর্গার স্বপ্নাদেশে আমরা পুনরায় পুজো শুরু করি। আমাদের পুরনো বাড়িতে দু’বছর পুজো করবার পর আমরা নতুন বাড়িতে উঠে আসায় এখানেই তারপর থেকে পুজো হয়ে আসছে। আমাদের এই পুজোকে কেন্দ্র করে গ্রামে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয় যা মেলার ন্যায় রূপ ধারণ করে। পুজোর ওই পাঁচটি দিন গ্রামের সকল মানুষেরা জাতি ধর্ম নির্বিশেষে আমাদের পুজো প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন মাকে দর্শন করেন এবং আমাদের এই ভৌমিক বাড়ির পুজোকে কেন্দ্র করে এলাকায় মেলা বসে। অষ্টমী নবমীতে ভোগ নিবেদন হয় এবং সেই ভোগ এলাকার মানুষ সহ সকলেই গ্রহণ করেন”।
তবে বলাই বাহুল্য দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর ব্লকের নন্দনপুরের এই ভৌমিক বাড়ির ৫৫১ বছরের দুর্গা পুজোকে কেন্দ্র করে এখন শুধুই ব্যস্ততা এলাকার বাসিন্দা থেকে শুরু করে সকলের মধ্যেই। আর বাড়ির মন্দিরের চালাতে চলছে দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরির ব্যস্ততা। রাত দিন এক করে কার্যত ঘেমে নেয়ে মৃৎশিল্পীরা ভৌমিক বাড়ির দেবী দুর্গাকে তৈরি করতে জোর কদমে প্রস্তুতি চালাচ্ছেন, কারণ হাতে সময় খুবই কম আর “মা” যে আসছেন।
Be the first to comment