বিজেপির তরফ থেকে করা মামলায় রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব করলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব। মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিজেপি নবান্ন অভিযান ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কলকাতা, হাওড়ার বিস্তীর্ণ অংশ। পুলিশ অনৈতিকভাবে বাধা দিয়েছে বলে দাবি করে বিজেপি। অন্যদিকে রাজ্যের দাবি, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করেছেন বিজেপি কর্মীরা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে কেন গ্রেফতার করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিজেপির তরফে একটি জনস্বার্থ মামলা করা হয়। সেই মামলার শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি স্বরাষ্ট্রসচিবের রিপোর্ট তলব করেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে বিজেপির অভিযান চলাকালীন গ্রেফতার করা হয়, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, রাজ্য বিজেপির নেতা রাহুল সিনহা-সহ বেশ কয়েকজন নেতা-নেত্রীকে। এরপরই আদালতের দ্বারস্থ হয় বিজেপির লিগ্যাল সেল। সেই মামলার শুনানি শেষে, ডিভিশন বেঞ্চের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়, অকারণে কাউকে আটকে রাখা যাবে না। পাশাপাশি, এ দিনের ঘটনা নিয়ে স্বরাষ্ট্রসচিবের রিপোর্ট তলব করেছে আদালত। আগামী সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া, সরকারি সম্পত্তি যাতে নষ্ট না হয়, সে দিকে সবার নজর দেওয়া উচিত বলেও উল্লেখ করেছে আদালত।
মঙ্গলবার রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘রেল পুলিশ, স্টেশনে তাঁদের আটকেছে, রাজ্য কী করতে পারে?’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, হাওড়া ময়দান এলাকা, সাঁতরাগাছি, কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে প্রচুর জমায়েত হয়। তাই পুলিশ রাখা হয়। একই সঙ্গে রাজ্যের তরফে আদালতে জানানো হয়, এমজি রোডে পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে, হাওড়ায় একটি পোস্ট উপড়ে ফেলা হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন পুলিশ। হাওড়ায় নতুন ফুটপাথ ভাঙা হয়েছে।
বিজেপির তরফে এ দিন সওয়াল করেন, আইনজীবী সুবীর স্যানাল, লোকনাথ চট্টোপাধ্য়ায়। বিজেপির আইনজীবীর দাবি, কার্যকর্তাদের আটকে রাখা হয়েছে, কলকাতায় আসতে দেওয়া হয়নি। মহিলা পুলিশ দিয়ে আটকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ, পরে গ্রেফতার করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, শুভেন্দুর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না। সেই নির্দেশের পরেও কেন গ্রেফতার করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। রাজ্যের তরফে দাবি করা হয়, শুভেন্দুকে রক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছে অন্যান্য মামলায়। তাই এ ক্ষেত্রে গ্রেফতার করায় অসুবিধা নেই বলে মন্তব্য রাজ্যের।
এ দিন তৃণমূলপন্থী আইনজীবী সঞ্জয় বর্ধন মন্তব্য করেন, ‘এই প্রথম দেখলাম কোনও জনস্বার্থ মামলায় নির্দিষ্ট দলের কথা বলা হয়েছে, যার সঙ্গে জনগণের স্বার্থের কোনও সম্পর্ক নেই।’ উল্লেখ্য, বেশ কয়েক ঘণ্টা পর লালবাজার থেকে ছাড়া পান শুভেন্দু অধিকারী ও অন্যান্য নেতারা। প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপে তাঁরা ছাড়া পেয়েছেন বলে দাবি করেন শুভেন্দু।
Be the first to comment