বুধবার বিকেলে আলিপুর মিউজ়িয়ামের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চ থেকে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসের অনেক টুকরো টুকরো মুহূর্তের কথা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। আলিপুর মিউজ়িয়াম প্রসঙ্গে বললেন, “এখানে বিপ্লবীদের যাবতীয় তথ্য সুরক্ষিত রাখা হয়েছে। কোনও তথ্য বিকৃত করা হয়নি।”
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে বিপ্লবীদের বলিদানের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, দেশের ইতিহাসকে বদলে ফেলা হচ্ছে বলেও কারও নাম না করে আক্রমণ শানান মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, “নতুন করে আমাদের ভাবতে হচ্ছে? কেন? কেন নতুন ধারনা নিয়ে আসা হচ্ছে? কেন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ইতিহাস, ভুগোল, বিজ্ঞানকে বদলে ফেলার ধারনা নিয়ে আসছে? যাতে আমাদের নতুন প্রজন্ম দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রকৃত সত্য জানতে না পারে। সেই কারণে এখন ইতিহাসকে সংরক্ষণ করে রাখা দরকার।”
নিজের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানান, “বিধানসভাতেও আমরা ইতিহাস সংরক্ষণ করছি। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর যা যা নথি রয়েছে, তা ইতিমধ্যেই ডিজিটাইজ় করে দেওয়া হয়েছে।” শুধু তাই নয়, এদিন মঞ্চ থেকে বেশ কিছু দেশাত্মবোধক গানও মঞ্চ থেকে শোনান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বাংলা যদি না থাকত, নবজাগরণ হত না। স্বাধীনতা আন্দোলনও হত না। সমাজ সংস্কারও হত না। আমরা এই মিউজিয়াম তৈরির আগে সংশোধনাগারকে বারুইপুরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এই মিউজিয়াম তৈরি করা হয়েছে সব হেরিটেজকে সুরক্ষিত রেখে। বাংলা যদি না থাকতো, তাহলে স্বাধীনতা আসত না। বাংলা থেকেই বিপ্লবীরা বলিদান দিয়েছেন। একের পর এক বিপ্লবী এই জেলের কুঠুরিতে নিজেদের জীবনের পুরো সময় কাটিয়েছেন। অনেকেই এই জেলের ভিতরে ফাঁসিকাঠে ঝুলেছিলেন।”
মুখ্যমন্ত্রী জানান, আলিপুর মিউজিয়ামকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে তুলে ধরার পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্যের। এই মিউজিয়ামে ফুড কোর্ট, কফি হাউস থেকে শুরু করে সব কিছুর ব্যবস্থা থাকছে বলেও জানান তিনি। দেশের ইতিহাস এবং স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ইতিহাসের কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “যাঁরা দেশকে এত দিয়ে গিয়েছেন,তাঁদেরকে উচিত নয় কি সম্মান জানানো? নেতায় নেতায় আদর্শে বিরোধ থাকতে পারে। কিন্তু সম্মানে বিরোধ থাকে বলে আমি মনে করি না। কোন নেতা ভালো নেতা? যে নেতা দেশকে লিড করেন। যে নেতা সবাইকে নিয়ে চলেন। সব ধর্মকে নিয়ে চলেন। সবাইকে সম্মান করে চলেন।”
Be the first to comment