আমার পিছনে খরচ না করে উন্নয়ন করুন, কয়লাকাণ্ডে CID তদন্তের আর্জি খারিজ হতেই মুখ খুললেন জিতেন্দ্র

Spread the love

হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের পর ডিভিশন বেঞ্চেও ধাক্কা সিআইডি। কয়লা পাচার কাণ্ডে সিবিআই-এর পাশাপাশি সিআইডি তদন্ত করতে পারবে না। এরকমই রায় দিয়েছিল সিঙ্গেল বেঞ্চ। যদিও সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানায় সিআইডি। মামলার আবেদন করে তারা যায় ডিভিশন বেঞ্চে। কিন্তু তাতে লাভ হল না কিছুই। অস্বস্তিতে পড়তে হল রাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থাকে। আর এই ঘটনায় কিছুটা স্বস্তি পেলেন বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তাঁর দাবি, ‘এইভাবে আমার পিছনে অর্থ খরচ না করে, রাজ্য সরকারের উচিত আসানসোলের উন্নয়নের জন্য ব্যয় করা। সেটাই হবে সঠিক কাজ।’

সম্প্রতি সিআইডি আসানসোল দুর্গাপুর কয়লা খনি এলাকায় সাতটি কয়লা চুরির কেসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠায় আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র তথা বিধায়ক জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে। সিআইডির তলব নিয়ে জিতেন্দ্র তেওয়ারি পাল্টা কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। এরপর ২৭ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ জানিয়ে দেয় এই মামলার তদন্ত সিআইডি করতে পারবে না।

সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার রাজ্য সরকারের সেই আর্জি খারিজ করে ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গেল বেঞ্চের রায় বহাল রাখে। অর্থাৎ কয়লা চুরির মামলার তদন্ত করবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। প্রথম রায়ের পরে জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেছিলেন, ‘এটা আইনের জয়। আমার জয় বলা উচিত হবে না।’ আর ১১ অক্টোবরের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের পর তিনি রাজ্য সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন।

আসানসোল দুর্গাপুর কয়লা খনি এলাকায় যে সাতটি কয়লা চুরির কেস তদন্ত করছিল সিআডি, সেই তদন্তে ইতিমধ্যেই দুই বড় ব্যবসায়ী সহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করে রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা। তারপর সিআইডি জিতেন্দ্র তেওয়ারি সহ একাধিক বিজেপি নেতাকেও ডেকে পাঠায় এই মামলায় সাক্ষী হিসাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। এরপর সেপ্টেম্বর মাসে আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র, প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি ও পাণ্ডবেশ্বরের প্রাক্তন বিধায়ক জিতেন্দ্র তেওয়ারি সিআইডির ডাকে সাড়া দিয়ে ভবানী ভবনে যাননি।

সিআইডির তলব নিয়ে জিতেন্দ্র তেওয়ারি পাল্টা কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় তার আবেদন ছিল, কয়লা চুরি ও পাচার ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের নির্দেশেই সিবিআই তদন্ত করছে। স্বাভাবিকভাবেই সিআইডি কি করে সেই মামলায় তদন্ত করতে পারে?

জিতেন্দ্রবাবুর এই আবেদনের ভিত্তিতেই হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থা গত ২৭ সেপ্টেম্বর জানিয়ে দেন সিআইডি এই মামলায় তদন্ত করতে পারবে না। কয়লা পাচারের মামলায় একমাত্র সিবিআই তদন্ত করবে। সেই রায়ের পরে জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেছিলেন, ‘আমাকে অন্ডাল থানার ৬৬ /২০ নম্বর কেসে ডাকা হয়েছে। এটি ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি থানায় দায়ের করা হয়েছিল। সেই কেসে ডাকা হয়েছে। আমি কখনোই মেয়র হিসেবে বা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক হিসেবে অন্ডাল এলাকার কোনও দায়িত্বে ছিলাম না। প্রতিহিংসার কারণেই আমাকে সিআইডি দিয়ে এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল।’

মঙ্গলবার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের পরে জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেন, ‘এইভাবে আমার পিছনে সরকারের অর্থ খরচ করে কী লাভ? এই অর্থতো তৃণমূল কংগ্রেসের নয়। আমার পিছনে এইভাবে অর্থ খরচ না করে, রাজ্য সরকারের যদি টাকা থাকে, তাহলে সেই টাকা আসানসোলের উন্নয়নের জন্য পাঠাক। এখানকার মানুষেররা পানীয়জল পাচ্ছেন না। রাস্তাঘাট সংস্কার করা হচ্ছে না। আসানসোল পুরনিগম চালানো যাচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘হাইকোর্ট তো বারবার বলছে, ওনারা অন্যায় করছেন। এটা তো তাদের মেনে নেওয়া উচিত।’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*