লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে মৃতের সংখ্য়া। গুজরাট জুড়ে যেন মৃত্যু মিছিল। গুজরাটের মোরবি জেলায় মাচ্ছু নদীতে ঝুলন্ত কেবল ব্রিজ ভেঙে মৃত্যু হয়েছে একাধিক সাধারণ নাগরিকের। বর্তমানে এই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৪১ জন। গত এক দশকে এত বড় বিপর্যয় দেখেনি গোটা দেশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্রিজ ভেঙে পড়ার আগের ও পরের মুহূর্তের ভিডিয়ো ঘোরাফেরা করছে। ভিডিয়ো দেখে শিউরে উঠছেন আম জনতা। প্রাণ বাঁচানোর জন্য জলের মধ্যে ডুবু ডুবু অবস্থায় ব্রিজের পাটাতন, কেবল ধরেই খাবি খাচ্ছিলেন মানুষেরা।
গুজরাটের তথ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, ‘এখনও পর্যন্ত ১৭৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৯ জন। এখনও সেনা, নৌসেনা, বিমানবাহিনী, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, দমকল বাহিনী তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে।’ গতকাল সন্ধে সাড়ে ৬ টা নাগাদ মাচ্ছু নদীর উপর এই ঝুলন্ত ব্রিজ ভেঙে পড়ে।
তারপর সন্ধে সাড়ে ৭ টা নাগাদ উদ্ধারকাজ শুরু হয়। ছট পুজো উপলক্ষ্যে মাচ্ছু নদীর তীরে যাওয়ার সরু রাস্তায় তুলনামূলকভাবে ভিড় বেশি থাকায় উদ্ধারকারীদের ঘটনাস্থলে পৌঁছতে সময় লেগে যায়। তবে ততক্ষণে স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। এনডিআরএফ, এসডিআরএফ এর সঙ্গে সেনা, নৌসেনা ও বায়ুসেনাও হাত লাগিয়েছে উদ্ধারকাজে। মাচ্ছু নদীতে নিখোঁজদের খুঁজতে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর মোট ৫ টি দল মোতায়েন করা হয়েছে।
ভারতীয় সেনার মেজর গৌরব জানিয়েছেন, ‘এখনও উদ্ধারকাজ চলছে। ভোররাত ৩ টে নাগাদ এখানে ভারতীয় সেনাবাহিনী এসে পৌঁছেছে। আমরা মৃতদেহ উদ্ধারের চেষ্টা করছি। এনডিআরএফ দল তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে।’ এই দুর্ঘটনার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গুজরাটেই ছিলেন। তিনি গোটা ঘটনার দিকে নজর রেখেছেন। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেলকে ফোন করে তিনি উদ্ধারকাজের জন্য দল মোতায়েনের কথা বলেন। নদী থেকে এখনও পর্যন্ত ১৪১ টি দেহ পাওয়া গিয়েছে। তাদের ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। আর আহতদের উদ্ধার করে মোরবি সিভিল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনার তদন্তের জন্য সিটও গঠন করেছেন। এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংভি সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী গতকালই উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছেন। বিভিন্ন জায়গায় মোতায়েন সমস্ত আধিকারিকদের মোরবিতে রাত ২ টোর মধ্যে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।’
Be the first to comment