২৪ নভেম্বর পর্যন্ত মানিকের জেল হেফাজতের নির্দেশ আদালতের

Spread the love

আজ বিশেষ ইডি আদালতে পেশ করা হয় প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত মানিক ভট্টাচার্যকে।দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা পর ফের ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত মানিকের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।বৃহস্পতিবার আদালতে মানিকের বিরুদ্ধে তারই ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলের বয়ানকে হাতিয়ার করেছে ইডি বলে সূত্রের দাবি।

গত কয়েক দিনে কয়েক দফায় টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তাপসকে। রেকর্ড করা হয়েছে তাঁর বয়ান। সেই বয়ানকে সামনে রেখেই এদিন সওয়াল করেন ইডির আইনজীবী। মূলত বেসরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে ভর্তির জন্য যে আর্থিক লেনদেন হয়েছে, তার হিসেব নিয়ে তাপসকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তাতে মানিকের বিরুদ্ধে সরাসরি টাকা নেওয়ার কথা জানান তিনি, এমনই দাবি ইডির।

নিয়োগ দুর্নীতিতে প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের ভূমিকা ঠিক কেমন ছিল, সেই তথ্য আগেও সামনে এনেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি। মানিকের ছেলের অ্যাকাউন্টেও নজর দিয়েছেন গোয়েন্দারা। উদ্ধার হওয়া নথি, সিডি ঘেঁটে কোটি কোটি টাকার হদিশ পেয়েছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার ফের মানিককে আদালতে পেশ করে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য পেশ করল ইডি।ইডি-র দাবি, ২০১৪ সালে ৩২৫ জন টেট পরীক্ষার্থী, যারা কৃতকার্য হননি, তাঁরা চাকরি পেয়েছেন। ইডি এদের চিহ্নিত করেছে। এরা অকৃতকার্য। তারপরও চাকরি পেয়েছে। কী ভাবে, কাকে টাকা দিয়ে চাকরি পেল? সেই প্রশ্ন তুলেছে ইডি।
আদালতে ইডি বলে, এই ৩২৫ জনের দেওয়া টাকা কোথায় লুকনো আছে? সেটা তদন্ত করা দরকার। ইডির আইনজীবী জানান, তাদের রাডারে রয়েছেন মানিকের জামাই। ইডি-র সন্দেহ মানিকের জামাইয়ের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়েছে চাকরি বিক্রির টাকা রাখতে।

শুধুমাত্র মানিকের জামাই নয়। ইডি-র নজরে রয়েছে, মানিকের মেয়ের শ্বশুর এবং ভাইদের অ্যাকাউন্টও। চাকরি বিক্রির টাকা তাদের অ্যাকাউন্টেও ঢুকেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ইডি সূত্রের খবর, একাধিক অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে। ৩২৫ জন যাঁরা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের কয়েকজনের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইডি।
একটা মোটা তালিকা দেখিয়ে ইডি-র আইনজীবী বলেন, ‘এই ভাবেই ২০ কোটি টাকা মানিক পেয়েছেন, অফলাইনে ভর্তি করিয়ে।’ আরও বলেন, ‘এই তালিকায় নাম রয়েছে বিভিন্ন বেসরকারি ডিএলএড কলেজের। কেউ ৩৫ হাজার টাকা দিয়েছেন, কেউ ৭০ হাজার টাকা দিয়েছেন। সেই তালিকা মেলালে ২০ কোটি টাকার হিসেব পাওয়া যায়।’

যদিও জামিনের আবেদন জানিয়ে মানিকের আইনজীবী বলেন, ‘বাইপাস অপারেশন হয়েছে। শারীরিক অবস্থা এবং বয়সের কথা ভেবে যে কোনও শর্তে জামিন দেওয়া হোক।’
মানিকের জামিনের বিরোধিতা করে ইডি তাদের লিখিত বয়ানে 8 টি কারণ উল্লেখ করেছে। ইডি-র অভিযোগ, মানিক প্রভাবশালী। আইনজীবী বলেন, ‘মানিক যদি এত প্রভাবশালী হতেন তাহলে তিনি কি গ্রেফতার হতেন? একজন বিধায়ক কি আদৌ এতটাই প্রভাবশালী?’

ইডি তাদের অভিযোগে জানিয়েছে, মানিক মোটা অর্থের বিনিময়ে ৩২৫ জন চাকরিপ্রার্থীকে ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার অসদুপায় চাকরি পাইয়ে দিয়েছে।
মানিকের অভিযোগ, ইডি এখানে টাকা লেনদেনের কোনও রশিদ দেখাতে পারেনি।শুধুমাত্র বয়ানের ভিত্তিতে বলছে। আইনজীবী প্রশ্ন তুলেছেন, প্রমাণ কোথায়? শুধুমাত্র কারও বয়ান দিয়ে কি এটা প্রমাণিত হয়!

ইডির দাবি, মেসার্স এডু ক্লাসেস অনলাইন নামে জে সংস্থার অ্যাকাউন্টে ২ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকা ঢুকেছিল, তার নথিপত্র তৈরি থেকে শুরু করে সংস্থা পিছন থেকে চালাতেন মানিক নিজেই। এই অভিযোগের উত্তরে মানিকের আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, এর স্বপক্ষে নথি কোথায়? সবটাই তো মুখের অভিযোগ!

আগের দিনের মতো এদিন ও মানিকের আইনজীবী সওয়াল করেন, এই মামলায় মূল অপরাধের তদন্ত করছে সিবিআই। তাদের এফআইআর বা কোনও চার্জশিটে মানিকের নাম নেই।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*