২৫ নভেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতেই কেষ্ট

Spread the love

হাজতেই দিন কাটাতে হবে বীরভূমে দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে। ফের তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে আদালতে। আগামী ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতিকে। দীর্ঘদিন পর তাঁকে আজ আদালতে পেশ করা হয়েছিল। তিনি জামিন পাবেন কি পাবেন না, তা নিয়ে জোরালো জল্পনা চলছিল। এদিকে অনুব্রতর সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে লটারির ভূমিকা নিয়েও বেশ জলঘোলা হচ্ছিল। আর এরই মধ্যে আসানসোল আদালতে ফের একবার প্রভাবশালী তত্ত্বেই খারিজ হয়ে গেল অনুব্রতর জামিনের আবেদন। যদিও এদিন আসানসোল আদালত চত্বরে অনুব্রত মণ্ডলের শরীরে ভাষা বেশ ইতিবাচক বলে মনে হল। হাসিমুখেই আদালত চত্বর থেকে বেরোলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, এদিন আদালতে অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবীরা দীর্ঘক্ষণ ধরে তাঁর জামিনের জন্য চেষ্টা করেন। বার বার জামিন চান বিচারকের কাছে। সিবিআইয়ের তরফে বার বার যে প্রভাবশালী তত্ত্ব, তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগগুলি তোলা হচ্ছে, সেগুলির বিরোধিতা করেন অনুব্রতর আইনজীবীরা। তাঁদের বক্তব্য, এই ধরনের কথা সারদা কাণ্ডের পর থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে এবং এর কোনও যৌক্তিকতা নেই বলেই দাবি তাঁদের। তবে শেষ পর্যন্ত এদিনও অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন এবং ২৫ নভেম্বর ফের তাঁকে আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে শুক্রবার আদালতে সিবিআইয়ের আইনজীবীদের তরফে সম্প্রতি ফিরহাদ হাকিমের মন্তব্যের কথাও তুলে ধরা হয়। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই বীরভূমে গিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম মন্তব্য করেছিলেন, “বনের বাঘ একদিক থেকে অন্যদিকে গেলে শিয়ালগুলো লাফালাফি করে। আবার যেই বাঘ আসে, শিয়ালও লেজ তুলে পালিয়ে যায়। বীরভূমের বাঘকে তোমরা কিছুদিনের জন্য খাঁচায় রেখেছ। সারা জীবন পারবে না। সেই বাঘ যখন আবার বেরিয়ে আসবে, আজকে যে শিয়ালগুলো হুক্কাহুয়া হুক্কাহুয়া করছে, তারা সব খাঁচায় ঢুকে যাবে।” আদালতে এদিন অনুব্রত মণ্ডলের প্রভাবশালী তত্ত্ব বোঝানোর জন্য সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরেন সিবিআইয়ের আইনজীবীরা। এর পাশাপাশি সাক্ষীদের ভয় দেখানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ সিবিআই আইনজীবীদের।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই ধোপে টিকল না। ফের জেল হেফাজতেই কাটাতে হবে অনুব্রত মণ্ডলকে। পঞ্চায়েত ভোট ক্রমেই এগিয়ে আসছে। তপ্ত হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি। গরম-গরম বাক্যবাণও আসছে। অনুব্রত-হীন বীরভূমে গিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীতে মনোবল চাঙ্গা রাখতে ঝাঁঝালো বক্তব্য রাখতে হচ্ছে ফিরহাদ হাকিমদের। কিছুদিন আগে আদালতের বাইরে কর্মীদের উদ্দেশে অনুব্রত বার্তা দিয়েছিলেন, আমি জেলে চিরস্থায়ী থাকব না। গ্রুপবাজি চলবে না। ফেরার পরে ওখানে পৌঁছে এক ধার থেকে সকলকে ছেঁটে দেব। ভাল করে সবাই কাজ কর। সামনে পঞ্চায়েত ভোট।” যাঁর কথাতে বীরভূমে বাঘে-গরুতে এক ঘাটে জল খেত, সেই অনুব্রত মণ্ডল এখন জেলে দিন কাটাচ্ছেন। কিছুদিন আগে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে অনুব্রতর বার্তার পর তাঁর জামিন সংক্রান্ত বিষয়ে অনেক জলঘোলা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও জামিন না মেলাও অনুব্রতর জন্য অস্বস্তি খানিক বাড়ল বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*