ধনকড় জমানায় লাগাতার রাজ্য-রাজভবন সংঘাত। এবার কী তার অবসান হচ্ছে। বৃহস্পতিবার, রাজভবনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে সাক্ষাতের পর এই আশা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এদিন, বিকেলে রাজভবনে যান মুখ্যমন্ত্রী। প্রায় একঘণ্টা আনন্দ বোসের সঙ্গে কথা হয় তাঁর। রাজভবনে থেকে বরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা জানান, ”রাজ্যপাল অত্যন্ত ভদ্র মানুষ, আশাকরি আর কোনও সমস্যা থাকবে না”।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, বড়দিন ও ইংরেজি নতুন বছরের আগে রাজ্যপালকে শুভেচ্ছা জানাতেই তিনি গিয়েছিলেন। এটাই সৌজন্য। নতুন রাজ্যপালের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর কথা হয়েছে। জগদীপ ধনকড়ের সময়ে বিধানসভায় পাশ হওয়া বিভিন্ন বিল রাজভবনে আটকে ছিল। প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন “রাজ্যপাল অত্যন্ত ভদ্র মানুষ, আশাকরি আর কোনও সমস্যা থাকবে না। রাজ্য সরকারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক এতই ভাল যে, আর কোনও সমস্যা হবে না। আলোচনা করে আমাদের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তিনি সহযোগিতা করছেন। এর জন্য আমরা কৃতজ্ঞ”।
রাজভবন সূত্রে খবর, বড়দিনের আগে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস মুখ্যমন্ত্রীকে চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের এদিন বিকেল ৪ টের পরে রাজভবনে যান মমতা। সিভি আনন্দ বোস বাংলার রাজ্যপাল হিসাবে শপথ নেওয়ার পরে এই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। সূত্রের খবর, আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্য বিধানসভায় শুরু হচ্ছে বাজেট অধিবেশন। ওই দিন বিধানসভায় নতুন রাজ্যপাল প্রথম ভাষণ দেবেন।
এদিন রাজভবনে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের সঙ্গে সেই বিষয়েও মুখ্যমন্ত্রীর কথা হয়েছে। শুক্রবার বিধানসভায় ফুল-মেলার উদ্বোধন করতে যাওয়ার কথা রাজ্যপালের। ৩০ তারিখ প্রধানমন্ত্রী রাজ্যে আসছেন। ওই সময় একাধিক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের এক মঞ্চে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলার আগের স্থায়ী রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সম্পর্ক একেবারেই ভাল ছিল না। বারবার রাজ্য রাজ্যপাল সংঘাতে জড়িয়েছে। কিন্তু বর্তমান রাজ্যপালের সঙ্গে এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের কোনও বিষয় নিয়ে মতানৈক্য তৈরি হয়নি। বরং শপথ নেওয়ার পর রাজ্য সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন সিভি আনন্দ বোস। সম্প্রতি কলকাতায় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে রাজ্যপালের মুখে শোনা গিয়েছে বাংলার প্রশংসা। অন্য দিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও নতুন রাজ্যপালকে প্রশংসা করেছেন। রাজ্যপাল হিসাবে শপথগ্রহণের পর তাঁকে ‘ভাল লোক’ বলে উল্লেখ করেছিলেন মমতা। সবমিলিয়ে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান এবং রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের এদিনের বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
Be the first to comment