সামনে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোট। তার আগে নয় রাজ্যের বিধানসভা ভোট রয়েছে। এই আবহে চলতি আর্থিক বছরের বাজেট পেশ করতে চলেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি থেকে আয়কর ছাড়— নির্মলা সীতারামনের বাজেট ঘোষণার অপেক্ষায় সারা দেশ। ইতিমধ্যেই তিনি পৌঁছে গিয়েছেন সংসদ ভবনে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, ভোট পাওয়ার আশায় এবছর জনমোহিনী বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী। এই বাজেটে কী দেবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-জল্পনা। কোন কোন ক্ষেত্রে কী কী আশা করা যাচ্ছে?
আয়কর
আয়করে আরও ছাড়ের আশা করছেন বাসিন্দারা। সাধারণ ভাবে প্রতি বছরে ২.৫ লক্ষ টাকা আয় পর্যন্ত আয়করে ছাড় রয়েছে। সেটা ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার হবে কিনা তা নিয়ে একটা আশা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এমনটা হলে মাসে গড়পরতা আরও ১ হাজার টাকা করে কর বাঁচতে পারে।
চাকরিরতদের আশা ৮০সি-এর অধীনে করছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা আরও বাড়তে পারে। এখন প্রতি আর্থিক বছরে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত করছাড় রয়েছে। সেটা আড়াই লক্ষ টাকা পর্যন্ত হবে বলে আশা।
এখন একজন ব্যক্তি স্বাস্থ্যবিমা খাতের প্রিমিয়াম ও খরচ বাবদ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত করছাড়ের আবেদন করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে এখন স্বাস্থ্যখাতে খরচ বৃদ্ধির কারণে সেই ছাড়ের সীমা ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
নতুন আয়কর নিয়মে করের মাত্রা কম কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে ছাড়ের সুবিধা নেই। এই বাজেটে কেন্দ্র সেদিকে নজর দেবে কিনা তা নিয়ে আশা করছেন চাকুরিরতরা।
শিক্ষাক্ষেত্র
শিক্ষাক্ষেত্রে চাহিদা বাড়ছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলিতে শিক্ষাখাতে সরকারি খরচও বাড়ছে। সেই পথে হেঁটে এবার কেন্দ্রও খরচ বাড়াবে কিনা সেই আশা রয়েছে।
গবেষণার উপর জোর দিতে পারে কেন্দ্র। সেক্ষেত্রে উচ্চস্তরীয় গবেষণাকেন্দ্র স্থাপনের কাজ বা গবেষণা খাতে ব্য়য় বৃদ্ধি করতে হবে।
পরিকাঠামো ক্ষেত্র
এবারের বাজেটে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে মনোযোগ দিতে পারে কেন্দ্র। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে আরও উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হতে পারে।
ICRA-এর বিশেষজ্ঞদের মতে সরকার নগর পরিকাঠামো খাতে ব্যয় বাড়াতে পারে। নগর যোগাযোগ , জল সরবরাহ. পয়ঃপ্রণালী ও আবর্জনা নিষ্কাশনের মতো কাজে খরচ বাড়াতে পারে কেন্দ্র।
আগামী অর্থবর্ষের জন্য মূলধনী খাতে ব্যয় ৯ থেকে ১০.৫ লক্ষ কোটি টাকা হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। চাহিদা বৃদ্ধি, চাকরির বাজার তৈরি করা, আর্থিক বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করবে সরকার, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কেন্দ্র নতুন করে বিলগ্নিকরণের পথে হাঁটবে কিনা তা নিয়েও জল্পনা তুঙ্গে। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে খরচের জোগান এবং বাজেট ঘাটতি মেটাতে কেন্দ্র বিলগ্নিকরণের পথে হাঁটতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্বাস্থ্যক্ষেত্র
বিশেষজ্ঞদের মতে, রোগীর চাপ সামলাতে জেলাস্তরে ও তালুকাস্তরে নতুন প্রকল্প প্রয়োজন।
স্বাস্থ্যবিমা সংক্রান্ত নতুন কোনও নিয়ম বা অতিরিক্ত সুবিধা বা, স্বাস্থ্যবিমান প্রিমিয়ামে জিএসটি ছাড় হয় কিনা সেদিকে তাকিয়ে জনতা।
কৃষিক্ষেত্র
কৃষকদের জন্য কেন্দ্রের অন্যতম উল্লেখযোগ্য প্রকল্প হল পিএম-কিসান (PM-KISHAN) প্রকল্প। সেই প্রকল্পের খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির আশা রয়েছে। কেন্দ্র এই বাজেটে কৃষিযন্ত্র ও সারের দাম কমাবে কি না তাও রয়েছে জল্পনার মধ্যে।
দেশেই তৈলবীজ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্র কোনও বিশেষ প্রকল্প নেয় কিনা সেটাও রয়েছে আলোচনার মধ্যে।
বাড়ি ও গাড়ি:১. বাজেটের দিকে নানা আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে রিয়েল এস্টেট এর সঙ্গে যুক্তরা। সেকশন ২৪-এর অধীনে গৃহ ঋণে করছাড়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় কিনা তা নিয়ে আশা করা হচ্ছে।
দূষণ ঠেকাতে বৈদ্যুতিন গাড়ির উপর জোর দেওয়ার কথা বলেছে কেন্দ্র। EV-এর জন্য নতুন কোনও ছাড় এই বাজেটে আসবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
Be the first to comment