হাটে হাঁড়ি ভাঙলেন তৃণমূলে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সাগরদিঘি উপনির্বাচনে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাসের সঙ্গে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর ছবি প্রকাশ্যে আনলেন অভিষেক। শোনালেন বিরোধী দলনেতার অডিও ক্লিপ। স্পষ্ট হয়ে গেল বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৃণমূলকে উৎখাত করতে চাইছে কংগ্রেস। তীব্র আক্রমণ করে অভিষেক বলেন, মুর্শিদাবাদে সবচেয়ে বড় মীরজাফরের নাম অধীররঞ্জন চৌধুরী।
২৭ তারিখ সাগরদিঘিতে বিধানসভা উপনির্বাচন। বিধায়ক সুব্রত সাহার মৃত্যুতে এই আসনটি শূন্য হয়েছে। উপনির্বাচনের প্রচারে রবিবার সেখানে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর মঞ্চ থেকে একের পর এক বোমা ফাটান তিনি। তিরে তিরে বিদ্ধ করেন বাম, কংগ্রেস, বিজেপিকে। তুলে ধরেন বিরোধীদের গোপন অশুভা আঁতাঁতের তত্ত্ব। অভিষেক এদিন সরাসরি মুর্শিদাবাদের দাঁড়িয়ে নিশানা করেন কংগ্রেস সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরীকে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কথায়, “অধীর সবচেয়ে বড় মীরজাফার”। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন্দ্র বাংলার ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রাখলেও, সংসদে কেন তা নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলেন না অধীর? একইসঙ্গে তীব্র কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, অমিত শাহর দেওয়া নিরাপত্তা রক্ষীদের নিয়ে ঘুরে বেড়ান অধীর। অভিষেকের কথায়, রাজ্য পুলিশের উপর আস্থা নেই কংগ্রেস সাংসদের। তিনি ‘দাদার’ দেওয়া নিরাপত্তারেক্ষীদের নিয়ে চলতে ভালবাসেন!
গত কয়েকটি জেলা সফরে গিয়ে মঞ্চে সাধারণ মানুষকে মঞ্চে ডেকে তুলে, ছবি দেখিয়ে- চমক দিয়েছেন অভিষেক। সাগরদিঘির প্রচার মঞ্চে ঘটালেন বিস্ফোরণ। একটি ছবি দেওয়া ফ্লেক্স মঞ্চে আনতে বলেন তৃণমূল সাংসদ। সেখানে সাগরদিঘির কংগ্রেস প্রার্থীর সঙ্গে ছবি ছিল বিজেপি বিধায়ক তথা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। এই ছবি দেখিয়েই অভিষেক অভিযোগ করেন, সাগরদিঘিতে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে কংগ্রেস। আছে সিপিএমও। কারণ, সেখানে কংগ্রেস প্রার্থীকেই সমর্থন করছে বামেরা। এরপরে নিজের মোবাইল ফোন থেকে একটি অডিও ক্লিপ শোনান অভিষেক। সেখানে শোনা যায় শুভেন্দু অধিকারী বলছেন, সাগরদিঘিতে সংখ্যালঘু এলাকায় পদ্মফুল ফুটবে কি না তিনি জানেন না, তবে জোড়াফুল যাতে জিততে না পারে তার ব্যবস্থা তিনি করে এসেছেন। এর পরেই তুমুল আক্রমণ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, এই ছবি এবং অডিও থেকে স্পষ্ট বিজেপির সঙ্গে গোপন আঁতাঁত করেছে কংগ্রেস। তৃণমূলকে হারাতে বাম-কংগ্রেস-বিজেপির অশুভ যোগ হয়েছে বলে তোপ দাগেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
এরপরে সাগরদিঘি থেকে দলীয় প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে একলক্ষেরও বেশি ব্যবধানে জয়ী করার ডাক দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তাঁর কথায়, কোনও বুথ থেকেই ‘মীরজাফরদের’ জিততে দেওয়া যাবে না। অভিষেকের মতে, কংগ্রেস জিতবে না। যদি কংগ্রেস প্রার্থী কোনোক্রমে জিতেও যান, তাহলেও ২৪ঘণ্টার মধ্যে তিনি হাত ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাবেন। সুতরাং কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া মানে সেটা বিজেপিকে ভোট দেওয়া। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নমূলক কাজকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে জোড়াফুল প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
Be the first to comment