বৈশাখের গরম গায়েব কলকাতায়। ঘূর্ণাবর্তের জেরে গত কয়েক দিন ধরেই বৃষ্টি হচ্ছে। আর এর জেরে বৈশাখ মাসের সেই চেনা গরম উধাও হয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে পারদপতনও হয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, বুধবার কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে গোলকিপার এ মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।এদিকে মৌসম ভবন জানিয়েছে আগামী শনিবার দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে পারে। যা নিয়ে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
গত কয়েক বছরে মে মাসে একের পর এক ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে বঙ্গোপসাগরে। ২০২০ সালে ধেয়ে এসেছিল ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’। যার তাণ্ডবে পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। লন্ডভন্ড হয়েছিল কলকাতাও। পরের বছর, ২০২১ সালে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’। ২০২২ সালের মে মাসে তৈরি হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’। ওই বছরের অক্টোবর মাসে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’। আশঙ্কা সত্যি বলে, আবার মে মাসে আরও একটি ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসতে পারে।
মৌসম ভবনের ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্রের বক্তব্য, ৫ থেকে ১১ মে-র মধ্যে বঙ্গোপসাগরে যে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হবে, তা আগেই জানানো হয়েছিল। পরে নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে এবং সেটি শক্তি বৃদ্ধি করে যে গভীর নিম্নচাপের চেহারা নিতে পারে, তা-ও মৌসম ভবনের পূর্বাভাসে জানানো হয়েছিল। কিন্তু এই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি। নিশ্চিত হলে তবে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দেওয়া হবে।
তবে ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা এখনও জারি না হলেও, রাজ্য প্রশাসন আগেভাগে কোমর বাঁধছে। মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট সব দফতরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মুখ্যসচিব। বন্যা মোকাবিলায় ডিভিসি-র জলাধার থেকে জল ছাড়ার আগে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। বর্ষা শুরুর আগে নদী-বাঁধের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবে সেচ দফতর। ১ জুন থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত থাকবে বিশেষ কন্ট্রোল রুম। ত্রাণ মজুত আছে কি না এবং উপকূলবর্তী এলাকায় ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় শিবিরের কী পরিস্থিতি, তা-ও খতিয়ে দেখতে বলেছেন মুখ্যসচিব।
বুধবার সকাল থেকে রোদ উঠলেও হাঁসফাঁস গরম মালুম হয়নি। রাত এবং ভোরে কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় আরামদায়ক আবহাওয়া টের পেয়েছেন সকলে। এপ্রিল মাসের অস্বস্তিকর গরমের পরিস্থিতি আর নেই। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে অনেকটাই স্বস্তিতে রাজ্যবাসী। বুধবার দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় বৃষ্টির পাশাপাশি কালবৈশাখীর পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। তবে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে। দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ারে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বাকি জেলাগুলিতেও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরের জেলাগুলিতে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী ৩ দিনে তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি করে নামতে পারে। এর পর আবার ২ থেকে ৪ ডিগ্রি করে বৃদ্ধি পেতে পারে তাপমাত্রা।
Be the first to comment