সওয়া ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার রাত পৌনে নটা নাগাদ নিজাম প্যালেস থেকে বেরোলেন। এদিন সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের পর অভিষেক বলেন, যা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি। য়াঁরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তাঁদের সময় নষ্ট হয়েছে। আমারও সময় নষ্ট হয়েছ। আগেও একই কথা বলেছিলাম। এসএসসি কেসে দাঁড়িয়েও একই কথা বলছি। প্রথম দিন থেকে এদের টার্গেট হচ্ছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ইডি, সিবিআই দিয়ে ধমকানোর চেষ্টা। ৬০ দিনের কর্মসূচিকে কী করে আটকানো যায় সেজন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে। আমাকে কাল যখন নোটিস দিল তখন বেলা আড়াইটে বাজে। ২০ ঘণ্টা সময় পেয়েছি। রাজনৈতিক চক্রান্তগুলো মানুষ এখন ধরে ফেলেছে। নোবেল নিয়ে ১৫ বছর ধরে তদন্ত হচ্ছে। ১০ বছর ধরে সারদার তদন্তের ফল শূন্য। যাদের কথা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তাদের ৯০ শতাংশের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুর ও মুর্শিদাবাদ। দলের তরফে কে দায়িত্বে ছিল? তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না কেন।
রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার হয়ে থাকব। আমরা বশ্যতা স্বীকার করব না। এদিন বেলা ১১টাতেই অভিষেক নিজাম প্যালেসে পৌঁছে যান। সওয়া ১১টা থেকে শুরু হয় ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ। মাঝে কিছুক্ষণের বিরতি দিয়ে দুদফায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআইয়ের একদল আধিকারিক।
এর আগে গত দুবছরে দুবার গরু এবং কয়লা পাচার কাণ্ডে ইডি অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করে। দুবারই প্রায় আট থেকে নয় ঘন্টা টানা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এদিনের জিজ্ঞাসাবাদের প্রেক্ষিত অবশ্য অন্য। জেলবন্দি বহিষ্কৃত তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষ জেল থেকেই হেস্টিংস থানার অফিসারকে লিখিত অভিযোগ করেন, নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিষেকের নাম বলানোর জন্য ইডি এবং সিবিআই অফিসাররা তাঁকে জোর করছেন।
একই অভিযোগ কুন্তল করেন আলিপুরের নিম্ন আদালতে। সেই অভিযোগের সত্যতা জানতে ইডি আদালতের দ্বারস্থ হয়। আদালতে মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, ২৯ মার্চ শহীদ মিনার ময়দানে এক সভায় অভিষেক জানান, সারদা কাণ্ডে মদন মিত্র, কুণাল ঘোষদেরও তাঁর নাম বলানোর জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল। তারপরেই কুন্তল ওই অভিযোগ আনেন।
এই দুইয়ের মধ্যে কোনও যোগ সূত্র থাকতে পারে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ১৩ এপ্রিল নির্দেশ দেন, কেন্দ্রীয় সংস্থা অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যান অভিষেক। সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দেয়।
তবে তিনি এই মামলাটি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরিয়ে নিতে বলেন। মামলা যায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। তিনি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশই বহাল রাখেন। তার বিরুদ্ধে অভিষেক এবং কুন্তল ডিভিশন বেঞ্চে যান। ডিভিশন বেঞ্চ তা শুনতে চায়নি। অভিষেকরা প্রধান বিচারপতির এজলাস থেকেও খালি হাতে ফেরেন শুক্রবার। সেদিনই বিকেলে সিবিআই নোটিস দেয় অভিষেককে। বলা হয়, শনিবার বেলা ১১টায় হাজির হতে হবে নিজাম প্যালেসে। শনিবার সকালেই অভিষেক সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন এই মামলার দ্রুত শুনানির জন্য।
Be the first to comment