রেল দুর্ঘটনা নিয়ে মোদি সরকারকে তুলোধনা অভিষেকের, দিনের মতো কর্মসূচি বাতিল

Spread the love

বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় মোদি সরকারকে তুলোধনা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই দুর্ঘটনায় দায় নিয়ে পদত্যাগ করা উচিত রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব- তোপ দাগেন অভিষেক। ২০হাজার টাকা ব্যয় করে সেন্ট্রাল ভিস্তা তৈরি হল, আর রেলের জন্য কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে অ্যান্টি কোলিশন ডিভাইস কিনতে পারছে না। সেটা থাকলে এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত বলে মত অভিষেকের। শুক্রবার সন্ধেয় ওড়িশার বালেশ্বর শতাব্দীর সবচেয়ে বড় রেল দুর্ঘটনার কারণে শনিবার, তাঁর রাজনৈতিক কর্মসূচি দিনের মতো বাতিল করেন অভিষেক।

তৃণমূলে নবজোয়ার কর্মসূচিতে গত একমাসের বেশি সময় ধরে বাংলার উত্তর থেকে দক্ষিণ চষে বেড়াচ্ছেন। এদিন হাওড়া (Howrah) জেলায় পৌঁছন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। বাগনান, শ্যামপুর-সহ একাধিক জায়গায় তাঁর কর্মসূচি করার কথাছিল। এদিন বাগনানে লাইব্রেরি মোড় থেকে খালো কালীবাড়ি পর্যন্ত মিছিল করে গিয়ে কালীবাড়িতে পুজো দেন। সেখানেই ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ২ মিনিট নীরবতা পালন করেন। এরপরই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে, দিনের মতো পরবর্তী রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলি বাতিল। সেখানেই সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কেন্দ্রীয় সরকার তথা রেলমন্ত্রকের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন অভিষেক। অভিষেক প্রশ্ন তোলেন, “গত দু’দশকে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেনি। করমণ্ডল এক্সপ্রেস যেন মৃত্যুমণ্ডল হয়ে গিয়েছে। কত নিরাপরাধ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর দায় কে নেবে?” যে ২০০ জন নিরীহ যাত্রী প্রাণ হারালেন, তাঁর দায় কার! তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কথায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে রেলমন্ত্রী বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্যরা কেউ ট্রেনে ভ্রমণ করেন না। সাধারণ মানুষের সুরক্ষার বিষয়ে উদাসীন মোদি সরকার। এর পরেই রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন অভিষেক। তাঁর প্রশ্ন, কেন দায় নিয়ে পদত্যাগ করবেন না রেলমন্ত্রী! তিনি দুহাতে দুটি ট্রেনের মডেল নিয়ে দেখিয়ে ছিলেন ট্রেনে সুরক্ষা কবজ লাগানো হচ্ছে। মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়ানো যাবে। কিন্তু সেই ডিভাইস বসানো হয়নি। অথচ ২০০৯ সালে রেলমন্ত্রী থাকাকালীনই এই যন্ত্রের জন্য টাকা বরাদ্দ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তীব্র কটাক্ষ করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, বেহিসাবি লকডাউনে যে এত লোক মারা গেলেন, নোটবন্দির লাইনে দাঁড়িয়ে যে ১৪০ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে বা করমণ্ডল এক্সপ্রেসে যে প্রায় তিনশো মানুষ মারা গিয়েছেন, তার রক্ত কার হাতে লেগে রয়েছে? প্রধানমন্ত্রী দায় নেবেন না?

লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে মোদি তাড়া করছেন বলেও সুর চড়ান অভিষেক। বলেন, “তাড়াহুড়ো করে নিজের ভোটের স্বার্থ দেখতে গিয়ে দু’বছরের কাজ ছ’মাসে শেষ করবেন না। রাজনীতি হবে, কিন্তু রাজনীতি করতে গিয়ে মানুষের প্রাণ নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন না। আশাকরি করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার থেকে শিক্ষা নেবেন।’

তৃণমূলের তরফে বলা হয়, এটাই রাজনৈতিক শিষ্টাচার। আজকে রাজনীতি করার দিন নয়। রবিবার, ডোমজুড়ে নবজোয়ার কর্মসূচি রয়েছে অভিষেকের। তবে এই সূচি পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*