মন্দিরে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী, ভোট এলেই NRC-CAA: বিজেপিকে দুষলেন মমতাবালা

Spread the love

গতকালের অশান্তির ঘটনায় এখনও থমথমে উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগর।ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে পুলিশ।এই আবহে সোমবার বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন তৃণমূল নেতৃত্ব।সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর বলেন,ঠাকুর বাড়ির জন্য কলঙ্কিত দিন। আমার শ্বাশুড়ি বেঁচে থাকাকালীন জিজ্ঞাসা করতেন “মা কেমন আছেন”! জিজ্ঞাসা করতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেন,ঠাকুর আমাদের সর্বধর্মের শিক্ষা দিয়েছেন।জাতপাত নিয়ে
বিভেদ না করতে।এই মন্দিরে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান সবাই আসতে পারেন।তাঁর প্রশ্ন,নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহ এলে আমরা তো আপত্তি জানাই না।রবিবার ঝামেলার মূলে ছিল আরএসএসের লোক, ছিল ডাণ্ডা।মন্দিরে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।ফুল, মালা ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। লাথি মেরে ঘট ফেলে দিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া ছিলেন।বড়মা বেঁচে থাকলে সবচেয়ে বেশি দুঃখ পেতেন।
মোদি-অমিত শাহের কাছে তাঁর প্রশ্ন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়ে মতুয়াদের উপর অত্যাচার। আমাকে খুন করার চেষ্টা করেছিল। শান্তনু-সুব্রতর নেতৃত্বে আমার উপর অনেক অত্যাচার হয়েছে।অথচ শান্তনু ঠাকুর যে বাড়িতে থাকেন, সেখানকার প্রভুত উন্নতি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মতুয়া উন্নয়ন বোর্ড করেছেন। রাস্তাঘাট করেছেন।হরি ঠাকুরের জন্মতিথিতে ছুটি ঘোষণা করেছেন।
তাঁর অভিযোগ,কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে,বিজেপি-আরএসএসের গুন্ডারা কলুষিত করেছে। আমার স্বামী, শাশুড়ি প্রয়াত হয়েছেন। আমি একজন বিধবা দুটি বাচ্চা নিয়ে ওই বাড়িতে থাকি। জানি না, আগামী দিনে কী অত্যাচার হবে।নিরাপত্তার অভাবে ভুগছি অনেকদিন ধরে। বাড়ি থেকে বেরোতে ভয় পাই। আমার স্বামী কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের উপর আগে অত্যাচার হতো। তিনি মারা যাওয়ার পর আমার আর আমার বাচ্চাদের উপর অত্যাচার হয়। মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর।
প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আর্জি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়ে অত্যাচার করছে শান্তনু ঠাকুর। সুব্রত ঠাকুর, মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের নেতৃত্বে অত্যাচার। নারীদের উপর আঘাত। শীলা বাগচী, শিপ্রা আমাদের সম্প্রদায়ের মানুষ, তাদের উপর অত্যাচার হয়েছে।মহিলাদের সুরক্ষা কোথায়। শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আমরা আগামীদিনে বৃহত্তর আন্দোলনে যাবো।
এমনকী, এদিন তিনি ফের অভিযোগ করেন, ভোট এলেই NRC-CAA করে। শান্তনু ঠাকুর কী নিজে এই বিষয়টি জানে। যদি না জানে তাহলে আমাদের সঙ্গে বসুক।
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন,ঠাকুর বাড়ির সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বড় মা বীনাপানীদেবীর সঙ্গে মা-কন্যার সম্পর্ক। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পুজো দিতে গিয়েছিলেন।পুজো করার অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। শান্তনু ঠাকুরের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় বাহিনী গুন্ডামি করেছে।
হিন্দু ব্রাহ্মণ বলে নাকি অভিষেক প্রবেশ করতে পারবেন না। বলছেন বিজেপির এক মুখপাত্র।আসলে বিজেপি জাতপাতের রাজনীতি করছে। আগে হিন্দু-মুসলমান ছিল, এখন ব্রাহ্মণ- অব্রাহ্মণ। বিজেপি মণিপুরের রাজনীতি করছে।কুণালের অভিযোগ,জুতো পরে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে তোলা হয়েছে মন্দিরে। এক্ষেত্রে মন্দির অপবিত্র হচ্ছে না। ওরা শান্তনু ঠাকুরের নিরাপত্তারক্ষী।শান্তনুর ক্ষমা চাওয়া উচিত।
এদিন কুণাল সাফ বলেন,NRC এবং CAA নিয়ে ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছে, যা ভিত্তিহীন। ভোট আসলেই মতুয়াদের বিভ্রান্ত করছে বিজেপি। জুতো পরে কীভাবে মন্দিরে? অপবিত্র করা হচ্ছে মতুয়া ধামকে।হাসপাতালে অশান্তির জন্য শান্তনু ঠাকুর সিবিআই চাইছে। আসলে ওটা ওদের শাখা সংগঠন। তাই সিবিআই চাইছে।
রাজ্যের মন্ত্রী ড.শশী পাঁজা বলেন, ঠাকুরনগরের পবিত্র মাটি, পবিত্র মন্দির। ওটাকে যুদ্ধক্ষেত্র বানিয়েছেন শান্তনু ঠাকুর, কিছু দুষ্ট মানুষ, বিজেপির গুন্ডারা এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী।হিন্দু ব্রাহ্মণ বলে নাকি অভিষেক প্রবেশ করতে পারবেন না। বলছেন বিজেপির এক মুখপাত্র।বিজেপি জাতপাতের রাজনীতি করছে। মমতাবালা ঠাকুরের উপর যেভাবে শান্তনু অত্যাচার করা হচ্ছে, তাকে ধিক্কার জানাই।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*