পঞ্চায়েত নির্বাচন উপলক্ষ্যে তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচিতে গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে ছিলেন, বাংলার বকেয়া টাকা দিল্লির বুক থেকে ছিনিয়ে আনতে ‘দিল্লি চলো’ যাত্রা হবে। অবশেষে একুশের মঞ্চে সেই দিন ঘোষণা করে দিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার একুশের মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অভিষেক জানিয়ে দেন, আগামী ২ অক্টোবর গান্ধী জয়ন্তীর দিন ‘দিল্লি চলো’ যাত্রা করা হবে। রাজধানীতে গিয়ে কৃষি ভবনের বাইরে পালন করা হবে ধর্না কর্মসূচি। শুধু তাই নয়, বাংলার বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাওয়ের ডাক দেন অভিষেক। এই কর্মসূচি পালিত হবে ৫ অগাস্ট।
এদিন মঞ্চে বক্তব্য রাখতে উঠে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “গত ২ মাস ধরে গোটা রাজ্য ঘুরে ঘুরে আমি জানিয়েছিলাম পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষ হওয়ার পর আমরা ‘দিল্লি চলো’ যাত্রা করব। বাংলার বকেয়া ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা ওরা আটকে রেখেছে। এই টাকা আদায় করতে যতদূর লড়াই করতে হয় আমরা করব। আপনাদের দিল্লি নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব আমার। আপনাদের সঙ্গে ট্রেনে করে আমিও দিল্লি যাব।” এরপরই অভিষেক ঘোষণা করেন, “আগামী ২ অক্টোবর গান্ধী জয়ন্তীর দিন আমরা দিল্লি যাব। ওখানে কৃষি ভবনের বাইরে আমাদের আন্দোলন জারি থাকবে যতদিন না ওরা আমাদের বকেয়া টাকা ফেরত দেবে।” শুধু তাই নয়, একইসঙ্গে তৃণমূল কর্মীদের বার্তা দিয়ে অভিষেক বলেন, “আপনার এলাকায় যেখানে যত বিজেপি নেতা রয়েছে তার তালিকা তৈরি করুন আগামী ৫ অগাস্ট ব্লকস্তরে বুথে বুথে বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও করবেন তৃণমূল কর্মীরা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ঘেরাও করা হবে বিজেপির নেতাদের।” তবে বিজেপি নেতাদের বাড়ির লোকেদের যাতে কোনওরকম সমস্যা না হয় এই ঘেরাওয়ের জন্য সেদিকেও তৃণমূল কর্মীদের নজর রাখার নির্দেশ দেন অভিষেক। জানান, দিল্লিতে ওদের নেতাদের আমরা ঘেরাও করব আর এখানে এই সব নেতাদের ঘেরাও করা হবে। পরে অবশ্য এই কর্মসূচি ব্যাখ্যা করে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, আসলে রাজ্যের নেতারা গর্বের সঙ্গে জানান, তারাই এই টাকা আটকে দিয়েছেন সেই জন্যই এই ঘেরাও কর্মসূচি। তবে বিজেপি নেতাদের বাড়ি থেকে ১০০ মিটার দূরে হবে এই ঘেরাও, যাতে তাঁদের পরিবারের কোনও অসুবিধা না হয়। এবং ব্লকস্তরে নয়, বুথস্তরে চলবে এই কর্মসূচি।
এছাড়াও এদিন বিজেপিকে তোপ দেগে অভিষেক জানান, আমি বলেছিলাম, ২০২১ সালে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের ভোটের ব্যবধান ছিল ৩৮ শতাংশ ও ৪৮ শতাংশ অর্থাৎ ১০ শতাংশের ব্যবধান। পঞ্চায়েত নির্বাচনে এটা ১৫ শতাংশ হবে। কিন্তু আমার অনুমান ভুল প্রমাণ করে মানুষ দেখিয়ে দিয়েছে তৃণমূল ৫২ শতাংশ ও বিজেপি ২২ শতাংশ অর্থাৎ ৩০ শতাংশের বেশি ব্যবধান। আসলে বিজেপির কাছে ইডি আছে সিবিআই আছে সব রকম চক্রান্ত আছে, কিন্তু তৃণমূলের কাছে মানুষ রয়েছে। তৃণমূল বিশুদ্ধ লোহা যত পোড়াবে তত মজবুত হবে। এছাড়াও ২৪-এর টার্গেট বেধে দিয়ে তিনি বলেন, ২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে দিল্লি জয় করবে ইন্ডিয়া। এই বিজেপিকে মানুষ ছুঁড়ে ফেলে দেবে। মানুষ চাইলে যাদের ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করেছে, তাদের মাটিতে নামিয়ে আনতে মানুষের ৫ মিনিট লাগবে না।
Be the first to comment