“শনিবার দার্জিলিংয়ের রাজভবনে তৃণমূলের সঙ্গে সাক্ষাত করতে চান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সৌজন্যতার খাতিরে রাজ্যপাল সাক্ষাতে দার্জিলিংয়ে ৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল পাঠাবে তৃণমূল। তবে কলকাতায় এসে আমার সঙ্গে দেখা করতেই হবে। যতক্ষন না উনি আসছেন আমাদের আন্দোলন জারি থাকবে।” শুক্রবার রাজভবনের সামনে ধর্না মঞ্চ থেকে স্পষ্ট বার্তা দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাংলার মানুষের পারিশ্রমিক চুরি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। মানুষের প্রাপ্য টাকা ফেরাতে চলছে আন্দোলন। রাজ্যপাল সাক্ষাৎ চেয়ে বৃহস্পতিবার থেকে রাজভবনের সামনে অভিষেকের নেতৃত্বে শুরু হয়েছে ধর্না কর্মসূচি। শুক্রবার এই মঞ্চ থেকেই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে নিশানা করেন অভিষেক। বলেন, “আগে জানিয়েছিলাম, প্রশ্নের সদুত্তর না পাওয়া অবধি আমাদের এই শান্তিপূর্ণ ধরনা চলবে। আমরা রাজভবন আমরা ঘেরাও করিনি, অনেটাই দূরে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছি। আমাদের ইমেল করে জানানো হয়, রাজ্যপাল বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শিলিগুড়িতে রয়েছেন এবং সেখানে কদিন থাকবেন। কিন্তু এখনও তিনি শিলিগুড়ি এসে পৌঁছননি, দিল্লিতে রয়েছেন। রাজ্যপাল কেন দিল্লিতে রয়েছেন, আমরা কেউ জানি না। রাজ্যপাল চাইলে আমরা দলের কয়েকজন প্রতিনিধিকে দার্জিলিঙেও পাঠাতে পারি। উনি জানিয়েছেন আগামিকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটায় দেখা করতে চান। আমাদের কোনও অহংকার নেই। সৌজন্যতার খাতিরে সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মহুয়া মৈত্র ও পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার গিয়ে দেখা করবেন।”
এরপরই রাজ্যপালকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে অভিষেক বলেন, “আমাদের কয়েকজন দার্জিলিং গিয়ে ওঁর সঙ্গে দেখা করবেন। কিন্তু তার মানে এই আমাদের সঙ্গে দেখা করবেন না! মূল প্রতিনিধি দল তো আমার নেতৃত্বে যাবে। আমি ৫০ লাখ চিঠি নিয়ে রাজভবন যাব। আমি তো এই চিঠি ওঁকে পড়িয়ে ছাড়ব। আপনাকে আমাকে সময় দিতে হবে। আপনি দার্জিলিঙে যতদিন খুশি থাকুন। কিন্তু এখানে এসে আমাদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথা না বললে, আমি এই জায়গা ছেড়ে উঠব না। কলকাতার রাজভবনে এসে আপনাকে আমাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। আর যতদিন না আসবেন ততদিন আমি এখানে আছি। দরকার পড়লে পুজোর অষ্টমীতেও এখানে একা বসে থাকব আমি।” একইসঙ্গে অভিষেক বলেন, “আমাদের মাত্র ২ টি প্রশ্ন। ২০ লক্ষ লোক মনরেগায় কাজ করেছে? হ্যাঁ কি না? আর যদি কাজ করে থাকে তবে কোন ধারায় তাঁদের টাকা আটকে রয়েছে? এই দুই প্রশ্নের উত্তর রাজ্যপাল কেন্দ্রের থেকে নিয়ে আমাদের জানাক আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেব।”
এদিকে দিল্লির মাটিতে গিয়ে অভিষেকের আন্দোলনের পর ঘুম ছুটেছে কেন্দ্রের মোদি সরকারের। আগামিকাল কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছে বিজেপি। যেখানে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতির। সেই প্রসঙ্গ তুলে এদিন অভিষেক বলেন, “৩ তারিখ আমরা প্রতিমন্ত্রী সাধ্বীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। অথচ ৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করেও দেখা হল না। ওনারা জানালেন বাইরের লোকের সঙ্গে দেখা করবেন না। প্রাপ্য টাকা না পেয়ে যারা গিয়েছে তারা বাইরের লোক? যাদের ভোট পেয়ে ওরা মন্ত্রী হয়েছে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে চায় না ওরা। দুদিন আগে ধাক্কা মেরেছে আর এবার বাংলায় আসতে হচ্ছে সাংবাদিক বৈঠক করতে। এটাই বাংলার ক্ষমতা। সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি আসবে, এরপর গিরিরাজ আসবে। তারপর একে একে অমিত শাহ, নরেন্দ্র মোদি সব আসবে।”
Be the first to comment