কামদুনি রায়ে স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট

Spread the love

কামদুনির রায়ে স্থগিতাদেশ দিল না শীর্ষ আদালত। তবে মুক্তিপ্রাপ্তদের জন্য একাধিক শর্ত সুপ্রিম কোর্টের। রাজারহাট থানার অনুমতি ছাড়া কোথাও যেতে পারবে না অভিযুক্তরা। থানা এলাকার বাইরে যেতে গেলে ওসি-র অনুমতি নিতে হবে। প্রতি মাসে প্রথম ও তৃতীয় সোমবার থানায় হাজিরা দিতে হবে তাদের। রাজ্যের বক্তব্য ছিল, কামদুনি কাণ্ডে যারা জড়িত, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে, তাদের মধ্যে ২ জন মুক্তি পেয়েছে। তাদের বেকসুর খালাস করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্যের বক্তব্য, ওই ২ জন যদি এলাকায় ফিরে যায়, তাহলে আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে। এর প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কামদুনির প্রতিবাদী ও নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। হাইকোর্টের নির্দেশের পর থেকেই তাঁরা অভিযোগ করছেন. নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। প্রতিবাদে কলকাতাতেও একাধিক কর্মসূচি নিয়েছেন তাঁরা।

মামলাকারীদের আরও বক্তব্য, ওই দু’জন ছাড়া পাওয়ার পর এই মামলার অন্যান্য তথ্য প্রমাণ লোপাট হতে পারে। কারণ এই মামলার পুনর্তদন্তের দাবি তুলেছে নির্যাতিতার পরিবার। বৃহস্পতিবার শুনাতিতে সুপ্রিম কোর্ট ওই দুই ব্যক্তির মুক্তির ওপর কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। কিন্তু তাদের ওপর একাধিক শর্ত আরোপ করা হয়েছে।

১. ছাড়া পাওয়া অভিযুক্তরা রাজারহাট থানার ওসির অনুমতি ছাড়া থানার বাইরে কোথাও যাতায়াত করতে পারবে না।

২) থানার বাইরে কোথাও যেতে হলে ওসির আগাম অনুমতি নিতে হবে।

৩) প্রত্যেক মাসের প্রথম ও তৃতীয় সোমবার রাজারহাট থানায় গিয়ে হাজিরা দিতে হবে।

৪) পাসপোর্ট থানায় জমা রাখতে হবে।

৫) ঠিকানা বদল করলে আগাম জানাতে হবে।

৬) তারা যে মোবাইল ফোন ব্যবহার করবে, সেই নম্বর ওসিকে জানাতে হবে।

তবে মামলাকারীরা পুনর্তদন্তের যে দাবি করছে, সে বিষয়ে শীর্ষ আদালত এদিন কিছুই বলেনি। মামলাকারীদের মূলত দাবি ছিল, বেকসুর খালাস হওয়া দুই অভিযুক্তকে আবার জেলে পাঠাতে হবে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে স্পষ্ট, তারা আবার এখনই জেলে ফেরত যাচ্ছে না।

এদিনের শুনানিতে নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী অভিযোগ করেন, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে বেকসুর খালাস হওয়ার পিছনে কলকাতা পুলিশের ব্যর্থতা রয়েছে। সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখার আবেদন জানান। সুপ্রিম কোর্টে আগামী দিনের শুনানিতে এই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানা গিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মামলাকারী কামদুনির প্রতিবাদী টুম্পা কয়াল বলেন, “যে আশা নিয়ে হাইকোর্টে গিয়েছিলাম, তা পূরণ হয়নি। তারপর সুপ্রিম কোর্টে যাই। সুপ্রিম কোর্ট আজ যে রায় দিয়েছে, তাতে আমাদের গ্রামের প্রত্যেকটা মানুষ শান্তিবোধ করছে। আসামীরা বাড়িতে, এটা নিয়েই সবার মনে ভয়। এর পিছনে অনেক বড় বড় লোকের হাত রয়েছে, তাই ওরা বেরোতে পেরেছে। হাইকোর্টের কাছে ওরা যে নথিপত্র পেশ করেছিল, তা সম্পূর্ণ ভুয়ো।” তিনি আরও বলেন, “২০১৩ সালের ঘটনার পর রাজ্য পুলিশ আমাদের গ্রামে নিরাপত্তা দিত। কিন্তু ২০১৬ সালের রায়ের পর থেকে পুলিশি নিরাপত্তা উঠে যায়। ক্যাম্প রয়েছে, সেখানে আদৌ পুলিশ থাকে কিনা, সেটা নিয়েই প্রশ্ন ছিল। হাইকোর্টের এই রায়ের পর আবার এখন দেখি গ্রামে এত পুলিশ চলে এল।”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*