বলা হয়, ইউপিএসসি পরীক্ষা দেশের অন্যতম কঠিন পরীক্ষাগুলির মধ্যে একটি। একবারের চেষ্টাতেই কেউ এই পরীক্ষায় পাশ করতে পেরেছেন, এমন নজির খুবই কম। তবে কম বলেই যে নজিরবিহীন, তা নয়। বরং এমন ব্যতিক্রম রয়েছে, যা শুনলে হতবাক হয়ে যেতে হয়। মাত্র ২১ বছর বয়সে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসে প্রথমবারের চেষ্টাতেই তাতে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন দিব্যা। তবে তাতে তাঁর মন মানেনি। পরের বছর ফের পরীক্ষায় বসেন। আর এবার আইএস পরীক্ষায় সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে রাতারাতি ‘ইন্টারনেট সেন্সেশন’ হয়ে উঠেছেন তিনি।
দিব্যা তনওয়ার উত্তরপ্রদেশের মহেন্দ্রগড়ের বাসিন্দা। ছোট থেকেই মেয়েটি অত্যন্ত মেধাবী। স্থানীয় একটি সরকারি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষার পর মহেন্দ্রগড় নবোদয় বিদ্যালয় ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর বিজ্ঞান নিয়ে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শুরু করেন দিব্যা। বলা বাহুল্য, সেখানেও দুর্দান্ত ফল করেন।
স্নাতক স্তরের পড়া শেষ হতেই ইউপিএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন দিব্যা। অনেকেই জানলে অবাক হবেন, এই প্রস্তুতির জন্য দিব্যার কোনও শিক্ষক ছিল না। এমনকী, কোনও কোচিং সেন্টারেও ভর্তি হয়নি তিনি। সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় রুটিন তৈরি করে নিয়মমাফিক পড়াশোনা করতেন। বিগত বছরের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র থেকে প্র্যাকটিস করতে করতেই সব মাথায় গেঁথে গিয়েছিল তাঁর। সেই নিষ্ঠা আর অধ্যবসায়ই ছিল তাঁর সাফল্যের চাবিকাঠি।
২০২১ সালে ২১ বছর বয়সে প্রথমবার ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসে আইপিএস হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। সেবার তাঁর র্যাঙ্ক ছিল ৪৩৮। তবে পুলিশ সার্ভিসে চাকরি পাওয়ার পরেও দিব্যার মন মানেনি। ইচ্ছে ছিল, অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসে যোগদান করার। তাই ফের পড়াশোনা শুরু করেন। ২০২২ সালের ইউপিএসসি পরীক্ষায় ফের বসেন দিব্যা। এবারের সাফল্য যেন আরও মধুর!
এবারে তাঁর র্যাঙ্ক হয় ১০৫, আইএস হিসেবে নির্বাচিত হন এই তরুণী। তাঁর এই অভাবনীয় সাফল্যের কাহিনী এখন ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। দিব্যা নিজেও সোশ্যাল মিডিয়ার বেশ সক্রিয়। অনুরাগীদের সঙ্গে প্রায়ই বিভিন্ন অনুপ্রেরণামূলক পোস্ট ভাগ করে নেন তিনি। বর্তমানে তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা ৯০ হাজারেরও বেশি।
জানা গেছে, দিব্যা মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে হওয়ায় বহু ক্ষেত্রেই আর্থিক প্রতিবন্ধকতা সম্মুখীন হয়েছেন। কিন্তু হার মেনে নেননি। বরং পাশে পেয়েছেন মাকে। তাঁর যাবতীয় প্রচেষ্টা, এবং সাফল্য, দুইয়েরই শরিক তাঁর মা। আর তাই ইউপিএসসি পরীক্ষায় পাশ করার সার্টিফিকেট মায়ের হাত তুলে দিতে চান আইএএস অফিসার দিব্যা তনওয়ার।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে রাতারাতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ট্রেন্ডিং’ হয়ে উঠেছিলেন আইএস টিনা ডাবি। সেবারের ইউপিএসসি পরীক্ষায় প্রথমবারের চেষ্টাতেই প্রথম হয়ে সারা দেশে সুনাম কুড়িয়েছিলেন ২২ বছর বয়সি টিনা। এমনকী, গুগল সার্চেও ট্রেন্ডিং ছিলেন দিল্লির এই তরুণী। তবে পরবর্তীকালে কাজের থেকেও ব্যক্তিগত জীবনের জন্য বেশি আলোচিত হয়েছেন টিনা। এখনও একপ্রকার তারকাই বলা যায় তাঁকে।
তবে আরও কম বয়সে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে যেন তাঁকেও পিছনে ফেলে দিলেন দিব্যা।
Be the first to comment