ফাটল ধরেছে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে? সাম্প্রতিককালে বাংলার রাজনীতিতে বারবার উঠে এসেছে তৃণমূলের প্রবীণ-নবীন দ্বন্দ্বের কথা। এই বিষয়ে মুখ খুললেন তৃণমূল সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলে কোনও দ্বন্দ্ব নেই বলে স্পষ্ট করে দেন তিনি। রবিবার নিজের লোকসভা কেন্দ্র, ডায়মন্ড হারবারের পৈলানের মাঠে বার্ধক্য ভাতা দেওয়ার সভা থেকে অভিষেক বলেন, অনেকে তৃণমূলের প্রবীণ-নবীন দ্বন্দ্বের কথা বলছে। কোথাও কোনও দ্বন্দ্ব নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দল ঐক্যবদ্ধ রয়েছে।
দলে নবীন ও প্রবীণ সদস্যদের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই, স্বাভাবিক নিয়মেই বয়সের কারণে যুবদের অগ্রাধিকার দেওয়ার ইঙ্গিত দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, আজ আমার ৩৬-৩৭ বছর বয়স। ২০ বছর,৩০ বছর বা ৪০ বছর পর আমার কর্মক্ষমতা কমবে। অভিষেক আরও বলেন, বয়স হলে কর্মক্ষমতা কমে। এতে অসুবিধার কী আছে! তার মানে এটা নয় যে, আমি আর কাজ করব না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দল চালাচ্ছেন। আমরা, তাঁর কর্মীরা তাঁর পাশে আছি।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচন থেকেই একেবারে সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিতে দেখা গিয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সম্প্রতি দিদির সুরক্ষা কবচ, নবজোয়ার কর্মসূচিতে একেবারে অগ্রভাগে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিছুদিন আগে তিনি বলেছিলেন, রাজনীতিতে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা থাকা দরকার। ১ জানুয়ারি, দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব প্রকট হয়। ওইদিনই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে যান অভিষেক। মমতার বাড়িতে যান ফিরহাদও। পরদিন নবীন-প্রবীণ বিতর্কে সুর কিছুটা নরম করে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, দলে নবীন-প্রবীণ সবাইকে প্রয়োজন।
আর এদিন বিতর্ক নস্যাৎ করে দিয়ে তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড বলেন, বয়স্কদের রাস্তায় থাকতে বললে অসুবিধা তো হবে। যুবদের রাস্তায় থাকতে বললে অসুবিধা কম হবে। আমাকে দল যে দায়িত্ব দিয়েছে, সুযোগ দিয়েছে সেটা পালন করছি। আমি আমার ক্ষমতা, সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করছি। দল নবজোয়ার, দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচি সামনে থেকে করতে বলেছে, সেটা করেছি। ২০২১-এ সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে বলেছিল, আমি করেছি। আজ আমি করতে পেরেছি। আমার বয়স ৫৬ বছর, ৬০ বছর হলে করতে পারব না। এপ্রসঙ্গে জনসংযোগের কায়দায় সাংবাদিকদেরও পাল্টা প্রশ্ন তুলে অভিষেক বলেন, আপনাদের ৬০ বছর বয়স হলে আপনারা ভারী ক্যামেরা কাঁধে নিয়ে ৩ ঘণ্টা দাঁড়াতে পারবেন? এটা খেলা, রাজনীতি- প্রতি ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এই কথায় বাজার গরম করার মতো কিছু নেই। এতে অন্তর্দ্বন্দ্ব, গৃহদাহ কোথা থেকে আসছে!
Be the first to comment