চোপড়ার শিশুমৃত্যুর ঘটনায় রাজনীতির রঙ। বিএসএফ-এর দিকে আঙুল তুলে এবার সরাসরি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের কাছে চিঠি পাঠাল তৃণমূল। বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে তৃণমূলের তরফে দু’পাতার একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে রাজভবনে। রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে চাইছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। দলীয় সূত্রে খবর, আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টায় রাজ্যপাল বৈঠকের জন্য সময় দিয়েছেন তৃণমূলকে।
উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গিয়েছে সোমবার। মাটি চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে চার শিশুর। জানা যাচ্ছে, সেখানে একটি ড্রেন কাটার কাজ চলছিল। সেই সময়েই আচমকা ধস নেমে মাটি চাপা পড়ে যায় চার শিশু। বিএসএফ জওয়ানরাই বাচ্চাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান, কিন্তু ততক্ষণে চার জনেরই মৃত্যু হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তরফেই এই ড্রেন কাটার কাজ চলছিল। যদিও উদ্ধারকারী বিএসএফ-এর বক্তব্য ছিল, এখানে তাদের কোনও ভূমিকাই নেই। তবে বিষয়টিকে ইস্যু করতে ছাড়ছে না তৃণমূল শিবির।
রাজ্যপালকে পাঠানো দু’পাতার চিঠিতে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের বক্তব্য, “বিএসএফ-এর ড্রেন সম্প্রসারণের কাজের সময়েই চার নিষ্পাপ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনও অনুমতি ছাড়াই বিএসএফ-এর নির্দেশে সেখানে ‘বেআইনিভাবে’ মাটি খুঁড়ে ড্রেন গভীর করা হচ্ছিল।” চোপড়ার এই ঘটনায় বিএসএফ-এর বিরুদ্ধেই গাফিলতির অভিযোগ তুলছে তৃণমূল শিবির। মঙ্গলবার দুপুরে তৃণমূলের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে কুণাল ঘোষ, ব্রাত্য বসু, শশী পাঁজাও এই চোপড়ার ইস্যুতে সরব হয়েছেন।
এমন অবস্থায় রাজ্যপাল বোস যাতে একবার চোপড়ায় গিয়ে এই মর্মান্তিক ঘটনার বাস্তব চিত্র সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন, সেই অনুরোধও করেছে তৃণমূল। সন্দেশখালির অভিযোগ পাওয়ার পর যে রাজ্যপাল তাঁর কেরল সফরে কাঁটছাট করে সন্দেশখালিতে গিয়েছিলেন, সে কথাও উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। তৃণমূলের বক্তব্য, রাজ্যপাল যেন চোপড়ার ঘটনার ক্ষেত্রেও একই ধরনের সহমর্মিতা দেখান।
উল্লেখ্য, গতকাল যখন ওই দুর্ঘটনা ঘটেছিল, তখন বিএসএফ-এর জওয়ানরাই বাচ্চাদের উদ্ধার করে চোপড়ার দলুয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু সেখানে চিকিৎসক বাচ্চাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। তবে বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে গাফিলতির যে অভিযোগ গ্রামবাসীদের একাংশ তুলছেন, সে বিষয়ে গতকাল উদ্ধারকারী বিএসএফের বক্তব্য ছিল, এখানে তাদের কোনও ভূমিকাই নেই। মানুষ বিপদে পড়েছে শুনে ছুটে আসে তারা। বাচ্চাদের দ্রুততার সঙ্গে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
Be the first to comment