খলিস্তানি-মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক ক্রমেই বেড়ে চলেছে। মঙ্গলের পর বুধবারও মুরলীধর সেন লেনে রাজ্য বিজেপির দফতরের বাইরে বিক্ষোভ দেখান শিখ সম্প্রদায়ের বহু মানুষ। তাঁদের দাবি, যে পুলিশ আধিকারিকের উদ্দেশে ‘খলিস্তানি’ মন্তব্য করা হয়েছে, সেই যশপ্রীত সিংহের কাছে তো বটেই গোটা শিখ সম্প্রদায়ের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। বিজেপি দফতর ঘেরাও কর্মসূচি থেকে উঠেছে ‘বিজেপি মুর্দাবাদ’ স্লোগানও। বিজেপি শিখবিরোধী, এই অভিযোগ তুলে মুনি লাল শিখ সঙ্গত গুরুদ্বার থেকে মুরলীধর সেন লেন পর্যন্ত একটি মিছিলেরও আয়োজন করা হয়েছে।
বিজেপির সর্বভারতীয় মুখপাত্র অমিত মালব্য এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে দাবি করেছেন মুরলীধর সেন লেনের বাইরে শিখ সম্প্রদায়ের যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তাঁদের নেতৃত্বে রয়েছেন দক্ষিণ কলকাতার যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি। অমিতের অভিযোগ, তৃণমূল সন্দেশখালির বিষয় থেকে নজর ঘোরাতেই এই বিতর্ক তৈরি করেছে। শুধু শহর কলকাতা নয়, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গাতেও শিখ সম্প্রদায়ের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে। শিখ সম্প্রদায়ের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্বে পশ্চিম বর্ধমানের বার্নপুর গুরুদ্বার কমিটির পক্ষ থেকে আসানসোল-হিরাপুর থানায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয় বুধবার দুপুরে। রাজ্যের বাইরেও এই বিতর্কের আঁচ পৌঁছেছে। ময়দানে নেমেছে আম আদমি পার্টি (আপ) এবং কংগ্রেসের মতো বিজেপি-বিরোধী দলগুলি।
কংগ্রেসের দাবি, রাজ্য পুলিশের কাজ সমালোচনাযোগ্য হলেও ওই আইপিএসকে ‘খলিস্তানি’ বলে নিন্দনীয় কাজ করেছে বিজেপি। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর দাবি, বিজেপি তাদের ‘রাজনৈতিক বাজার’ সাজাতেই ‘বিদ্বেষের চাষ’ শুরু করেছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতারা এক জন পুলিশ অফিসারকে ‘খলিস্তানি’ বলে সম্বোধন করেছেন। তাঁকে অপমান করেছেন। আমি এর নিন্দা করছি। বাংলার সংস্কৃতি সম্পর্কে সচেতন নয় বিজেপি। আমরাও সন্দেশখালি যেতে চেয়েছিলাম। আমাদেরও থামানো হয়েছিল। তার মানে এই নয় যে, কর্তব্যরত কোনও অফিসারকে তাঁর ধর্ম নিয়ে অপমান করতে হবে। এই ধরনের মন্তব্যে আইপিএস যশপ্রীত সিংহ অবশ্যই অপমানিত বোধ করেছেন। কংগ্রেসও বাংলার পুলিশের সমালোচনা করে। কিন্তু আমরা এই ধরনের মন্তব্য সমর্থন করি না। এই মন্তব্যের জন্য বিজেপির উচিত প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া।’’
Be the first to comment