‘আমি জীবনে কোনওদিন এক সম্প্রদায়ের সঙ্গে অন্যদের আলাদা করে দেখিনি’…মনমোহন সিং

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক :- স্বল্পভাষী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ভাষায় লোকসভা ভোটের প্রচারে একটা বড় সময় জুড়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্রেফ ‘হিন্দু-মুসলমান’ করে গিয়েছেন। এমনকি বাংলায় এসেও তিনি বারবার বলেছেন, এ রাজ্যে হিন্দুরা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে গিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন মনমোহন সিং নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকারের কাছে নাকি মুসলিমরাই ছিল চোখের মণি, মুসলিমদেরই সমস্ত সুযোগসুবিধায় অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে…মোদীর এই আক্রমণের জবাব দিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। ইউপিএ সরকারের দুবারের প্রধানমন্ত্রী বললেন, তিনি কোনওদিন কোনও সম্প্রদায়কে বিভাজনের চোখে দেখেননি। কোনও ধর্মকে অন্য ধর্মের থেকে আলাদা দৃষ্টিতে দেখেননি।

শেষ দফার ভোটের আগে দেশবাসীর উদ্দেশে লেখা এক চিঠিতে বৃহস্পতিবার মনমোহন বলেছেন, “এবারের ভোট প্রচার খুব ভালোভাবে দেখছিলাম। মোদীজি সারাক্ষণ জঘণ্য ঘৃণাভাষণ দিয়ে গিয়েছেন। যা অত্যন্ত বিভাজনের রাজনীতি। মোদীজি হলেন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি ওই পদের মর্যাদাকে নীচে নামিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী পদের মর্যাদার যে গুরুত্ব তা ক্ষুণ্ণ করেছেন।
দেশের আর কোনও প্রধানমন্ত্রী এতটা হীন ছিলেন না। “
এই দাবি করে মনমোহন আরও লিখেছেন, “উনি যেভাবে অসংসদীয় এবং নিচুমানের কথা বলেছেন তা বলার নয়। ওনার ভাষণের আদ্যপান্ত ভাষা ছিল একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী অথবা বিরোধীদের নিশানা করে। ওরা আমার সম্পর্কেও ভুল বক্তব্য বলেছে। “
মনমোহন লিখেছেন, “আমি জীবনে কোনওদিন এক সম্প্রদায়ের সঙ্গে অন্যদের আলাদা করে দেখিনি। এটা বিজেপির বিশেষ অধিকার এবং এতেই ওরা অভ্যস্ত।”

দেশের মানুষের কাছে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন মনমোহন। তাঁর আবেদন,” দেশের উন্নতি ও প্রগতিশীল ভবিষ্যতের গ্যারান্টি একমাত্র কংগ্রেসেই দিতে পারে। সংবিধান অক্ষত রাখতে বদ্ধপরিকর কংগ্রেস আমি দুহাত জড়ো করে দেশবাসীর কাছে আবেদন করছি, শান্তি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য, ভ্রাতৃত্বের পরিবেশ ফিরিয়ে আনুন।
এই মুহূর্তে দেশের প্রতিটি মানুষের কর্তব্য এই বিরোধকামী শক্তির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা।”

চিঠির শেষে আল্লামা ইকবালের একটি কবিতার পংক্তি উদ্ধৃত করে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং লিখেছেন, “ফির উঠি আখির সদা তৌহিদ কি পাঞ্জাব সে, মর্দ-এ-কামিল নে জাগায়া হিন্দ কো ফির খোয়াব সে। জয়হিন্দ।”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*