পিটিয়ে খুন করা হয়েছিল এক ব্যক্তিকে, সেই ১৪ জন হত্যাকারীকে পেশ করা হলো আদালতে..

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক :- আজ আদালতে হাজির করা হচ্ছে সেই ১৪ জন হত্যাকারী কে। বৌবাজারের হস্টেলে যুবককে পিটিয়ে মারার ঘটনায় ধৃত ১৪ জন। আজ শনিবার আদালতে হাজির করানো হবে। তার আগে ওই হস্টেলে তল্লাশি চালিয়ে একাধিক ব্যাট এবং লাঠি উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেগুলি দিয়েই যুবককে মারধর করা হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে শুক্রবার সকালে হস্টেলের ভিতরে ঠিক কী কী ঘটেছিল, বিশদে তদন্ত করছে পুলিশ। এই সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধৃতদের শনিবার পুলিশি হেফাজতে চাওয়া হতে পারে।
বেলগাছিয়ার বাসিন্দা ৩৭ বছরের ইরশাদ আলম চাঁদনি চক এলাকায় একটি টিভি সারাইয়ের দোকানে কাজ করতেন। শুক্রবার সকালে বৌবাজার এলাকায় মোবাইল চোর সন্দেহে টেনে-হিঁচড়ে তাঁকে উদয়ন হস্টেলের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেখান থেকেই ইরশাদ ফোন করেছিলেন তাঁর দোকানের মালিক মহম্মদ ইমরাকে। পরে তিনি পুলিশ নিয়ে হস্টেলে যান এবং সেখান থেকে যুবককে উদ্ধার করা হয়। তবে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় যে ১৪ জনকে শুক্রবার গ্রেফতার করেছে মুচিপাড়া থানার পুলিশ, তাঁরা সকলেই কোনও না কোনও কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন কিংবা বর্তমান ছাত্র। উদয়ন হস্টেলের আবাসিক তাঁরা।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের বেশির ভাগের বয়স ২২ থেকে ২৪ বছর। দু’-এক জন ২৭- ২৮ বছরের যুবকও রয়েছেন তাঁদের মধ্যে। তাঁরা কেউ প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, কেউ রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা সংস্কৃত কলেজের ছাত্র। প্রেসিডেন্সি এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীও রয়েছেন ধৃতদের তালিকায়। ধৃতেরা ঝাড়গ্রাম, নদিয়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ, জলপাইগুড়ি, দক্ষিণ দিনাজপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং কোচবিহারের বাসিন্দা। সকলেই পড়াশোনার সূত্রে কলকাতায় এসেছিলেন।
বৃহস্পতিবার ওই হস্টেলের এক আবাসিকের মোবাইল ফোন চুরি গিয়েছিল। ঘটনার সূত্রপাত সেখান থেকেই। থানায় ফোন চুরির অভিযোগও দায়ের করা হয়েছিল। শুক্রবার সকালে হস্টেলের পাশে এক দোকানের মালিক ছাত্রদের জানান, এক যুবক এলাকায় ঘুরঘুর করছেন। অভিযোগ, দোকানি বলার পরেই সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ হস্টেলের সামনে ফুটপাথ থেকে ওই ইরশাদকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। যে দোকানে তিনি কর্মরত ছিলেন, সেখানকার মালিককে সাহায্যের জন্য ফোন করেছিলেন ইরশাদ। বৌবাজারের এক বিখ্যাত মিষ্টির দোকানের নাম করে বলেছিলেন, তার উল্টো দিকের হস্টেলে তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং আটকে রাখা হয়েছে। তার পর সেখানে পুলিশ পৌঁছয়। আদালতে এই মামলা কোন দিকে মোড় নেয়, সেটা অবশ্য সময়ই বলবে।
মারধরের খবর পেয়ে শুক্রবার যখন উদয়ন হস্টেলের সামনে পুলিশ পৌঁছয়, তখন হস্টেলের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল বলে অভিযোগ। পুলিশ বার বার বলা সত্ত্বেও প্রথমে কিছুতেই দরজা খোলা হচ্ছিল না। পরে দরজা খোলে এবং দেখা যায় সিঁড়ি দিয়ে আহত যুবকে নামিয়ে আনা হচ্ছে। অভিযোগ, দোতলায় নিয়ে গিয়ে যুবককে মারধর করা হয়েছিল। তার আগে ফুটপাথেও তাঁকে ধাক্কাধাক্কি করা হয় বলে অভিযোগ। হস্টেলের ভিতরে কোথায় কী ঘটেছিল, দোতলায় যুবকের সঙ্গে কী করা হয়েছে, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। হস্টেলের এক তলাতেও মারধর করা হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
বৌবাজারের ওই হস্টেলের সামনে একটি কেকের দোকান রয়েছে। সেখানে সিসি ক্যামেরাও রয়েছে। শুক্রবার তার ফুটেজ দেখতে দোকানে গিয়েছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন ওই দোকানে গিয়েছিলেন অভিযুক্তদের কয়েক জনও। কেন ওই দোকানে তাঁরা গিয়েছিলেন, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*