রোজদিন ডেস্ক :- মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে ‘সৎসঙ্গ’ অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে অধিকাংশ মহিলা ও শিশু রাই বেশি। আহত হয়েছেন আরও অনেক। মঙ্গলবার সন্ধের পর থেকে স্থানীয় হাসপাতালগুলির বাইরে শুধুই কান্নার রোল পড়ে যায় । হাথরাস জুড়ে শোক আর হাহাকার এর পরিস্থিতি তৈরি হয়।
মঙ্গলবার হাথরাসে সৎসঙ্গের আয়োজন করেছিলেন নারায়ণ সাকার হরি ওরফে সাকার বিশ্ব হরি ওরফে ভোলে বাবা। সেই অনুষ্ঠানের শেষেই হুড়োহুড়ি পড়ে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রাত পেরিয়ে সকাল হয়ে গেলেও, এখনও দেখা নেই অনুষ্ঠানের আয়োজক ভোলে বাবা-র। অতএব মনেই হচ্ছে তিনি পলাতক।
বুধবার সকালেই এই ঘটনার এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। যেখানে কিন্তু সেখানে ধর্মগুরু ভোলেবাবার নাম নেই। শুধুমাত্র মূল অভিযুক্ত হিসেবে নাম রয়েছে দেবপ্রকাশ মধুকরের। তিনি ওই সংস্থার মুখ্য সেবায়েত। এখনও পর্যন্ত এই মামলায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি৷
ইতিমধ্যে আগরার অতিরিক্ত ডিজিপির নেতৃত্বে বিশেষ টিম গঠন করে ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
হাথরাসে এখনও চলছে চারিদিকে উদ্ধারকাজ। নামানো হয়েছে ডগ স্কোয়াড। ফরেনসিক পরীক্ষাও চলছে পুরোদমে। একযোগে কাজ করছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ, এনডিআরএফ। মঙ্গলবার রাতের পর বুধবার সকালেও ভোলে বাবার আশ্রমে যায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিশাল বাহিনী। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁর কোনও সন্ধান পায়নি পুলিশ। তিনি পলাতক।
পুলিশের অনুমান, অনুষ্ঠানের পর ফুলরাই গ্রাম, অর্থাৎ যেখানে ওই পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, সেখান থেকে অন্তত ১০০ কিলোমিটার দূরে মাইনপুরীর আশ্রমে যান ভোলেবাবা। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে সেখানেও ওই ধর্মগুরুকে খুঁজে পায়নি পুলিশ। মইনপুরির ডিএসপি সুনীল কুমার সিং বলেন, ‘আমরা বাবাকে চত্বরে খুঁজে পাইনি। সে এখানে নেই।’ বুধবার মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন। হাথরসের ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ছোট জায়গায় বড় জমায়েতের আয়োজন কেন করা হল? কেনো ছিল না কোনো আইন শৃঙ্খলা? বিপর্যয়ের সম্ভাব্য কারণ নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন। সংশ্লিষ্ট আয়োজক সৎসঙ্গ কমিটিকেই দায়ী করছেন সাধারণ মানুষ ও মৃতের পরিবারবর্গ। কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর মতে, অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর হুড়োহুড়ির কারণেই ভিড়ের চাপে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারান শতাধিক মানুষ। যে জায়গায় সৎসঙ্গ অনুষ্ঠান হয় সেখানে মাত্রাতিরিক্ত ভিড় তৈরি হয়। জায়গায় তুলনায় মানুষ বেশি হয়ে পড়ে। বাবা-র গাড়ি না বেরনো পর্যন্ত ভক্তদের ওই জায়গা ছেড়ে যেতে দেওয়া হয়নি। এরপর বেরনোর সময়ই দুর্ঘটনা ঘটে।
Be the first to comment