মৃত্যুমিছিলের মধ্যেই সংসদে পেশ বিপর্যয় মোকাবিলা সংশোধনী বিল

Spread the love

চিরন্তন ব্যানার্জি :- কেরল, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড যখন প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত, কেরলের ওয়ানড়ে ভয়ংকর ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা প্রায় ৩০০ ছুঁইছুঁই। অতিবৃষ্টিতে বিপর্যস্ত দিল্লি, মুম্বই-সহ একাধিক শহর। কেদারনাথে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে আটকে বহু পর্যটক। শিমলাতেও শুরু হয়েছে প্রবল বর্ষণ। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সংসদে বিপর্যয় মোকাবিলা সংশোধনী বিল পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই। ২০২৪-এ রাজ্য প্রাকৃতিক বিপর্যয় রেসপন্স বাহিনী, নগর বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব রয়েছে। বিলটিতে ডিজাস্টার ডেটাবেস তথা বিপর্যয় সংক্রান্ত তথ্যভাণ্ডার তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। এর ফলে, দুর্যোগ বা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পূর্বাভাস পাওয়া যাবে। এছাড়া দিল্লি, মুম্বইয়ের মতো মেগা সিটিগুলোর জন্য পৃথক বিপর্যয় মোকাবিলা পরিকাঠামো তৈরির কথা বলা হয়েছে। নতুন বিলে জাতীয় এবং রাজ্য স্তরে ডেটাবেসে তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। বড় বড় শহর ও রাজ্যের রাজধানীগুলোতে বিপর্যয় মোকাবিলার বিশেষ ম্যানেজমেন্ট অথারিটি গঠনের উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এই ডেটাবেসে ত্রাণ তহবিলের জন্য বরাদ্দ ও ব্যয় সংক্রান্ত তথ্য এবং কেন্দ্র দ্বারা নির্ধারিত প্রস্তুতি ও পরিকল্পনাও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
প্রসঙ্গত, কেরলে অতিভারী বৃষ্টির জেরে ওয়ানাড় জেলায় ভয়াবহ ভূমিধসে প্রায় ৩০০-র কাছাকাছি মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। নিখোঁজ আরও বহু। গতরাত, বুধবার, হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইতিমধ্যেই কেরলের পরিস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক জলঘোলা শুরু হয়েছে। বিজেপি, কংগ্রেস ও সিপিএমের মধ্যে দায় নিয়ে চাপানউতোর চলছে। এরমধ্যেই এদিন সংসদে নয়া বিল আনতে চলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই বিলে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষকে আরও শক্তিশালীভাবে কাজ করার বিভিন্ন ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে জাতীয় ও রাজ্যস্তরের কর্তৃপক্ষকে নিজস্ব পরিকাঠামো এবং পরিকল্পনা তৈরি স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। আগে এইগুলি সম্পাদন করত জাতীয় ও রাজ্য এক্সিকিউটিভ কমিটি। আইন যাই হোক, এই বিল আসছে এমন একটি সময়ে যখন গোটা দেশ মৌসুমি বায়ুর প্রকোপে বিপর্যয়ে ডুবে আছে। আর তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও। আর এনিয়ে কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন রাজীব চন্দ্রশেখর। বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ চন্দ্রশেখর বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে পোষ্ট করেন, কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ যখন কেন্দ্রীয় পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ছিলেন তখন বিশেষজ্ঞ কমিটি কেরল, ওয়ানাড় এবং পশ্চিমঘাটে ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির কথা জানিয়েছিল। কিন্তু, সেই রিপোর্টের ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি কেন। যদি সেদিন তা হতো তাহলে আজ এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হতো না। এতগুলি নিরীহ জীবন, পরিবার এবং জীবিকা বিপর্যস্ত হতো না। প্রচার সর্বস্ব রাজনীতি যাই হোক না কেন, এখন সময় এসেছে এইসব দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের জবাব দেওয়ার।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*