জেলা সম্পাদকের পদ থেকে অপসারিত সুশান্ত ঘোষ, নারীঘটিত বিতর্কেই কি সরালো সিপিএম?

Spread the love

চিরন্তন ব্যানার্জি:-

একের পর এক ঘটনায় খবরের শিরোনামে থাকতো বাম আমলের মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ। এবার তাঁকে তারই দল সরিয়ে দিল। জেলা সম্পাদকের পদ থেকে সরানো হল রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষকে। রাজ্য কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নতুন জেলা সম্পাদক পদে দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন সিপিআইএমের জেলা কমিটির সহ – সম্পাদক বিজয় পাল। ঠিক কী কারণে তাঁকে সরানো হয়েছে তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। তবে শুক্রবারই রাজ্য কমিটির সিদ্ধান্ত এসে পৌঁছয় জেলায়।
সূত্রের খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ জমা পড়েছিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে৷ অন্যদিকে তাঁর বিরুদ্ধে ‘মহিলাঘটিত’ অভিযোগের তদন্ত চলছে। এসবের মাঝেই সিপিএম তাঁকে পদ থেকে ‘ছুটি’তে পাঠাল। শুক্রবার মেদিনীপুরে সিপিএমের জেলা কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে জেলা সম্পাদক হিসাবে বিজয় পালের নাম ঘোষণা করা হয়।
উল্লেখ্য, শুক্রবার দলের জেলা কমিটির পর্যালোচনা বৈঠক অবশ‌্য সুশান্তবাবুর নেতৃত্বেই শুরু হয়। গত লোকসভা ভোটে দলের শোচনীয় হাল নিয়ে ছিল পর্যালোচনা বৈঠক। দল কেন ব‌্যর্থ, জেলা কমিটির বৈঠকে সেই রিপোর্টও পেশ করেছেন সুশান্ত ঘোষ। কিন্তু তার পর সেই বৈঠকেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে দিলেন দলের রাজ‌্য সভাপতি।
প্রসঙ্গত, গত ২০২২ সালে দলের জেলা সম্মেলনে ভোটাভুটিতে তাপস সিনহাকে হারিয়ে জেলা সম্পাদক নির্বাচিত হন কঙ্কালকাণ্ডে নাম জড়ানো সুশান্ত ঘোষের। বিগত বামফ্রন্ট আমলে মন্ত্রী থাকাকালীন নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর কঙ্কাল উদ্ধার মামলায় দীর্ঘসময়ে জেলে কাটাতে হয়েছে তাঁকে। পরবর্তীকালে দলের শীর্ষনেতাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে বই লিখে দল থেকে সাসপেন্ডও হয়েছেন গড়বেতার দাপুটে নেতা সুশান্ত ঘোষ। তার পরও ঘুরে দাঁড়িয়ে দলের জেলা সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হয়েছিলেন। পাশাপাশি ভোটের প্রার্থীও করে সিপিএম। যদিও তিনি পরাজিত হয়েছিলেন। কিন্তু ইদানিংকালে নারীঘটিত কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে তাঁর নাম। দলীয় সূত্রের খবর, চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক মহিলার সঙ্গে বছরের পর বছর ধরে সহবাসের অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। ওই মহিলা তথ‌্য,প্রমাণ-সহ রাজ‌্য সম্পাদকের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছিলেন। দলের পক্ষ থেকে দুই সদস‌্যের তদন্ত কমিশনও গঠন করা হয়। কমিশন নির্যাতিতা মহিলা, অভিযুক্ত সুশান্ত ঘোষ থেকে শুরু করে দলের বিভিন্ন স্তরের নেতার সঙ্গেও কথাবার্তা বলে। তার ভিত্তিতে সুশান্তবাবুকে দলের জেলা সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফার নির্দেশ দেওয়া হয়।
যদিও সুশান্ত ঘোষের দাবি, স্ত্রীর অসুস্থতার কারণ জানিয়ে আপাতত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন তিনি । সব মিলিয়ে জেলা সম্মেলনের আগেই এধরনের সিদ্ধান্ত নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*