শনিবার আইএমএর ডাকে গোটা দেশ জুড়ে কর্মবিরতি চিকিৎসকদের, ব্যাহত ৫৫ হাজার হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা

Spread the love

চিরন্তন ব্যানার্জি:-

আরজিকর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে জুনিয়র চিকিৎসকেরা কর্মবিরতি শুরু করেন। সেই কর্মবিরতি ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ে গোটা রাজ্যজুড়ে, এবার ডাক্তারদের কর্মবিরতি ছড়িয়ে পড়লো গোটা দেশ জুড়ে।
শনিবার ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের তরফে আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে সারা দেশে কর্মবিরতি পালন করবে। এর ফলে শনিবার গোটা দেশের ৫৫ হাজার হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা থমকে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আইএমএ-র তরফে দাবি করা হয়েছে, সংগঠনের যেসব সদস্য বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত তাঁরা আউটডোরে বসবেন না। চেম্বারও বন্ধ রাখবেন। সংগঠনের জাতীয় সভাপতি আর ভি অশোকন এবং সাধারণ সম্পাদক অনিলকুমার জে নায়েকের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশের সব রাজ্যেই চিকিৎসকরা ‘সফট টার্গেট’। রোগীর মৃত্যু হলে অথবা চিকিৎসারত অবস্থায় অবস্থা সংকটজনক হলে প্রথম রোষ আছড়ে পড়ে চিকিৎসকদের উপর। প্রায় এমন ঘটেছে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের তরুণী চিকিৎসককে নৃশংস খুন-ধর্ষণের ঘটনায়। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বুধবার রাতে নিরস্ত্র চিকিৎসকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হাই কোর্ট চিকিৎসক খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু সহর্মমিতা দেখাতেই কর্মবিরতেতে অংশ নেবেন সদস্যভুক্ত দেশের প্রায় সাড়ে চার লক্ষ চিকিৎসক। আইএমএ-র দাবিকে নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠন।
অন্যদিকে, আইএমএ কর্মবিরতির ডাক দেওয়ার পরেই এদিনই স্বাস্থ্যভবন থেকে রাজ্যের ২৮টি মেডিক্যাল কলেজ ও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের ভার্চুয়াল বৈঠকে আউটডোর, জরুরি বিভাগ এবং রোগীভর্তি স্বাভাবিক রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের সরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে কর্মরত প্রায় ৫৫ হাজার চিকিৎসকের মধ্যে আজ যাঁদের ডিউটি রয়েছে তাঁদের নির্দিষ্ট সময়ে কর্মস্থলে হাজির থাকতে সংশ্লিষ্ট উপাধ্যক্ষ নির্দেশ দিয়েছেন। স্বাস্থ্যভবনের এক কর্তার কথায়, সরকার উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়েছে। সব হাসপাতালে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল বা মেডিক্যাল কলেজের যেসব অংশ সন্দেহজনক, সেখানে হ্যালোজেন ও সিসিটিভি বসানো হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য ছয় দফা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর পরে কর্মবিরতিতে অংশ নিলে তা রোগীস্বার্থের বিরোধী। রাজ্যের ৬টি ডেন্টাল কলেজ খোলা থাকবে। খোলা থাকবে হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালও। চিকিৎসকদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তনী সংগঠনের ব্রিটিশ শাখা। তাঁদের পক্ষ থেকে আরজি কর কাণ্ডে দোষীদের শাস্তি দাবি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আইএমএ কর্মবিরতির ডাক দিলেও বেশ কিছু কেন্দ্রীয় সংগঠন এই কর্মবিরতিতে অংশ নিচ্ছে না। এরমধ্যে দিল্লির অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল সায়েন্সেস, পিজিআই চণ্ডীগড়, ওড়িশা এইমস, পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণী এইমস বা ইএসআই জোকা’র মতো কেন্দ্রীয় হাসপাতাল কর্মবিরতির বিরোধিতা করেছে। কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*