রোজদিন ডেস্ক :-
ওঁ কৃষ্ণায় বাসুদেবায় হরয়ে পরমাত্মনে। প্রণত ক্লেশনাশায় গোবিন্দায় নমো নমঃ।।
ভাদ্র মাসের আগমন মানেই মনটা সবার আনন্দে ভরে ওঠে। আর যদি বাড়িতে “গোপাল সোনা ” থাকে , তাহলে তো ব্যস্ততা তুঙ্গে।
আরে হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন, জন্মাষ্টমীর কথাই বলছি।
সেদিনের আকাশে ছিল রোহিণী নক্ষত্র। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথি। জন্ম নিলেন বিষ্ণুর দশম অবতার।
কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী হিন্দুদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক উৎসব। এই দিন সারা দেশেই বিশেষ উৎসব পালন করা হয়। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণ পক্ষের অষ্টমী তিথিতে কৃষ্ণ অবতারে মর্ত্যে আবির্ভূত হন বিষ্ণু। তাই এই তিথির নাম কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী।
কংসের কারাগারে বাসুদেব ও দেবকীর অষ্টম সন্তান রূপে ভগবান শ্রী বিষ্ণু জন্ম গ্রহণ করেন। সেই দিনটিকে আমরা কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে উদযাপন করে থাকি।
জন্মাষ্টমী ২০২৪-র কবে পড়েছে?
এবছর ২৬ অগাস্ট পড়েছে জন্মাষ্টমী এবং ২৭ অগাস্ট নন্দোৎসব।
জন্মাষ্টমী ২০২৪-র অষ্টমী তিথি
২৬ অগাস্ট ঘ ৮/৩৫/২৩ থেকে ২৭ অগাস্ট ঘ ৬/৪৭/৩২ পর্যন্ত থাকবে অষ্টমী তিথি।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে নবদ্বীপ, নদীয়া, মথুরা, বৃন্দাবন সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মহা সমারোহে উৎসব পালন করা হয়। প্রায় একমাস আগে থেকে চলে তাঁর প্রস্তুতি। জন্মাষ্টমী উৎসবে নিষ্ঠা করে সব নিয়মকানুন পালন করলে শ্রীকৃষ্ণ সন্তুষ্ট হন। নন্দগোপালকে সকলে বাড়ির আদরের ছোট শিশুর মতো মনে করেন। তাই ভালোবাসে তাকে একাধিক ভোগ উৎসর্গ করা হয়। তবে তার মধ্যে জন্মাষ্টমীর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে কিছু প্রচলিত ভোগ।
- মাখন – মিছরি
ননীগোপালের সবচেয়ে প্রিয় হল মাখন – মিছরি। পৌরাণিক গল্প অনুসারে শ্রীকৃষ্ণ ছোটবেলায় মায়ের আড়ালে ননী খেতেন, তাই তার আরেক নাম ননীগোপাল। সেজন্যেই এই বিশেষ দিনের ভোগের মধ্যে এটা রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
- তালের বড়া ও তালের ক্ষীর
ভাদ্র মাসে খুব ভাল তাল পাওয়া যায় বাজারে। এই ফলের থেকে একাধিক রকমের সুস্বাদু পদ তৈরি করা যায়। আর সেগুলি গোপাল ঠাকুরকে উৎসর্গ করা হয় এদিন।
- মালপোয়া
জন্মাষ্টমী মানেই মালপোয়া। সুজি ও ময়দা দিয়ে তৈরি এই ভাজা মিষ্টি নন্দগোপালের অত্যন্ত পছন্দের এক খাবার। তাই জন্মাষ্টমী বা নন্দ উৎসবের ভোগে এটি রাখা মাস্ট।
৫৬ ভোগ
জন্মাষ্টমীর ভোগের মধ্যে ৫৬ ভোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ৫৬ রকমের নৈবেদ্যর সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানা পৌরাণিক কাহিনি। নিয়ম অনুসারে ৫৬ ভোগে থাকে ১৬ ধরনের জলখাবার, ২০ টি মিষ্টি এবং ২০ ধরণের শুকনো ফল। যার মধ্যে দুধের তৈরি খাবার সবার আগে পরিবেশন করতে হয়।
- মোহনভোগ
জন্মাষ্টমীর আরও একটি প্রচলিত ভোগ হল মোহনভোগ। আগে মূলত বাড়িতেই তৈরি করা হত এই মিষ্টি। তবে বর্তমানে দোকানেও কিনতে পাওয়া যায় এটি।
- ক্ষীর
শুধু মাখন নয়, জন্মাষ্টমীতে গোপালকে তাঁর আরও এক পছন্দের খাবার উৎসর্গ করা হয়, তা হল ক্ষীর।
- নারকেল নাড়ু
বাঙালি বাড়িতে লক্ষ্মী পুজো ছাড়া যেদিন নাড়ু বানানো মাস্ট, তা হল জন্মাষ্টমী।
- বাসন্তী পোলাও
অনেকেই নন্দদুলালকে বাসন্তী পোলাও ও আরও একাধিক পদ রেঁধে নৈবেদ্যতে সাজিয়ে দেন জন্মাষ্টমীর দিন। তবে সেটা অবশ্যই নিরামিষ হয়।
- লুচি -সুজি
যে কোনও পুজোতেই বাঙালিদের প্রসাদের বাটায় লুচি -সুজি থাকেই। এই পুজোতেও তার অন্যথা হয় না।
- মিষ্টি
যেহেতু গোপাল সকলের খুব আদরের। যদি ভক্তরা তাঁদের মন পসন্দ মিষ্টি উৎসর্গ করেন তাকে।
Be the first to comment