রোজদিন ডেস্ক:- আশঙ্কা থাকলেও এই রাজ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে দুর্যোগ-পরবর্তী পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কোনও শৈথিল্য রাখতে চাইছে না নবান্ন। শুক্রবার দুপুরে রাজ্য প্রশাসনের এই মনোভাবের কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুরে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক থেকে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছে সংশ্লিষ্ট জেলার পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন তিনি। সেখানে বসেই প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন। সামগ্রিক ভাবে গোটা রাজ্যের জন্যই প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাধিক নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। বিশেষ ভাবে নজর দিতে বলেন উপকূলবর্তী দুই জেলা পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার পরিস্থিতির উপরে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “দুর্যোগে বহু চাষের জমি নষ্ট হয়েছে।” এই সূত্রেই তিনি কৃষকদের ক্ষতি কতটা, তা যাচাই করতে সমীক্ষা করানোর নির্দেশ দেন। বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষজন যাতে এখনই নিজেদের বাড়ি না ফেরেন, তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পাশাপাশি জমা জল থেকে মশাবাহিত বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাবের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মশারি বিলির পরামর্শ দেন। তাঁর কথায়, “যেখানে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ রয়েছে, সেখানে মশারি দিতে হবে।”
আবহাওয়া পরিস্থিতির সম্পূর্ণ উন্নতি না-হওয়া পর্যন্ত ত্রাণ শিবিরগুলি চলবে বলে শুক্রবার জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিভিন্ন রোগের হানা রুখতে মেডিক্যাল ক্যাম্প চালানোর নির্দেশ দেন তিনি। পর্যাপ্ত ত্রাণের বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে বলেন। এ ক্ষেত্রে টেলি মেডিসিন কার্যকর করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। দুর্যোগে যাঁদের বাড়ি ভেঙে গিয়েছে, তাঁদের বিষয়টি সরকার দেখবে বলে জানান। বিপর্যস্ত এলাকায় আরও দু’দিন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল (এনডিআরএফ) এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দল (এসডিআরএফ)-এর কর্মীদের মোতায়েন রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলাশাসকদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, কোথাও পলির কারণে জল জমে থাকলে, তা খতিয়ে দেখতে হবে। ডিভিসিকেও তোপ দাগেন তিনি। ফের অভিযোগের সুরে বলেন, “ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলেই ডিভিসি জল ছাড়ছে।” দুর্যোগের ক্ষেত্রে রাজ্যকে কেন্দ্র কোনও সাহায্য করে না বলেও ফের দাবি করেন তিনি। রাজ্যে দুর্যোগে এক জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এক জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। সেটাও খুব দুর্ভাগ্যজনক। উনি বাড়িতে কেবল তার নিয়ে কাজ করছিলেন।” প্রশাসনকে মৃত ব্যক্তির পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেন তিনি।
ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র গতিবিধি নজরে রাখতে রাতভর নবান্নেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার দুপুরেও তিনি সেখানেই রয়েছেন। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল থেকে একাধিক বার নিজের ১৪ তলার দফতর থেকে কন্ট্রোল রুমে নেমে এসে দুর্যোগ-পরিস্থিতির খোঁজখবর নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পর ফের নিজের দফতরে ফিরে জেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন বলে ওই সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।
Be the first to comment