এবার ৮ দফা দাবি জানিয়ে মুখ্যসচিবকে পাল্টা ইমেল জুনিয়র ডাক্তারদের পাল্টা সংগঠনের

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক :-   মুখোমুখি সংঘাতে। ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্‌স’ ফ্রন্টের বিপ্রতীপে দাঁড়িয়ে সদ্য গঠিত ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্‌স’ অ্যাসোসিয়েশন। জুনিয়র ডাক্তারদের নতুন সংগঠন (অ্যাসোসিয়েশন) তৈরির পর থেকেই পুরনো সংগঠন(ফ্রন্ট)কে নিশানা করে গিয়েছে তারা। মুখ্যসচিবকে পাঠানো ইমেলেও ফ্রন্টের সঙ্গে সেই বিরোধ প্রকাশ্যে।

জুনিয়র ডক্টর্‌স’ ফ্রন্ট-এর ১০ দফা দাবি ছিল রাজ্য সরকারের কাছে। যার প্রায় সিংহভাগই মেনে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার জুনিয়র ডাক্তারদের নতুন সংগঠনও নিজেদের দাবিদাওয়া তুলে ধরছে রাজ্য সরকারের কাছে। রবিবার সন্ধ্যায় মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে এই মর্মে একটি ইমেলও পাঠিয়েছে জুনিয়র ডক্টর্‌স’ অ্যাসোসিয়েশন। মোট আট দফা দাবি মুখ্যসচিবকে পাঠানো ইমেলে তুলে ধরেছেন অ্যাসোসিয়েশনের জুনিয়র ডাক্তারেরা।
কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য জুনিয়র ডাক্তারদের দাবির সঙ্গে সহমতও হতে দেখা গিয়েছে। ফ্রন্টের প্রথম দাবি ছিল নির্যাতিতার জন্য বিচার। অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদেরও প্রথম দাবি সেটিই। নির্যাতিতার জন্য বিচার এবং দোষীদের ফাঁসির দাবি তুলেছেন তাঁরা। এ ছাড়া চিকিৎসক, নার্স ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার দাবিও মুখ্যসচিবকে ইমেলে জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন। জানানো হয়েছে রোগী পরিষেবায় পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর দাবিও।
তবে বাকি দাবিগুলির বেশিরভাগ থেকেই ফ্রন্টের সঙ্গে অ্যাসোসিয়েশনের বিরোধ ফুটে উঠেছে। আরজি করে নির্যাতিতার জন্য বিচারের দাবিতে শুরু থেকেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে জুনিয়র ডক্টর্‌স’ ফ্রন্ট। সেই আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে একাধিক আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগ রয়েছে বলে দাবি অ্যাসোসিয়েশনের। এমনকি নির্যাতিতার জন্য বিচারের দাবি নিয়ে যে তহবিল গঠন করা হয়েছে, সেখানেও বেনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ। জুনিয়র ডাক্তারদের নতুন সংগঠন চায়, ওই অভিযোগগুলির ভিত্তিতে সরকারের পদক্ষেপ করুক। ওই তহবিলের অডিট করার দাবিও তুলেছেন অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরা।
রাজ্যের প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজ থেকে উঠে আসা অভিযোগগুলির তদন্ত চাইছে জুনিয়র ডক্টর্‌স অ্যাসোসিয়েশন। ২০২১ সালে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। সেই ঘটনাটি সম্প্রতি আবারও ভেসে উঠেছে। অভিযোগ উঠছে, ওই ছাত্রীও ‘হুমকি সংস্কৃতি’-র শিকার হয়েছেন। কিন্তু ‘হুমকি সংস্কৃতি’-র অভিযোগে বিদ্ধ ডাক্তারি পড়ুয়াদের তালিকায় নেই রামপুরহাট মেডিক্যালের ওই ‘অভিযুক্ত’। তাঁকে কি আড়াল করার চেষ্টা করছে ফ্রন্ট? এমন প্রশ্নও উঁকি মারতে শুরু করেছে। সে ক্ষেত্রে অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের দাবি, রামপুরহাটের ঘটনা-সহ প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজ থেকে উঠে আসা এই ধরনের অভিযোগের তদন্ত করতে হবে। দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থাও করতে হবে।
কোনও মেডিক্যাল কলেজে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে এক পক্ষের বক্তব্য শুনে শাস্তি না দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরা।
টাস্ক ফোর্স, রোগী কল্যাণ সমিতি-সহ কলেজ ও রাজ্যস্তরের সব কমিটিতে নিজেদের প্রতিনিধিত্ব চাইছে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্‌স’ অ্যাসোসিয়েশন। এ ক্ষেত্রে জুনিয়র ডক্টর্‌স’ ফ্রন্টের সঙ্গে সম অনুপাতে প্রতিনিধিত্ব চায় তারা। জুনিয়র ডক্টর্‌স’ অ্যাসোসিয়েশনকে সংগঠনের স্বীকৃতি দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে মুখ্যসচিবকে পাঠানো ইমেলে। আরজি করের কেবি হস্টেলের ৩২ নম্বর কক্ষটিকে সংগঠনের ঠিকানা হিসাবে ব্যবহার করছে ফ্রন্ট। অ্যাসোসিয়েশনও চাইছে ওই কক্ষটিকেই সংগঠনের ঠিকানা হিসাবে ব্যবহার করতে। ইমেলে তারা লিখেছে, অন্যথায় ফ্রন্টকেও সংগঠনের ঠিকানা হিসাবে কেবি হস্টেলের ৩২ নম্বর কক্ষ ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না। এ ছাড়া বিভিন্ন সরকারি পদে চিকিৎসক-নার্সদের নিয়োগের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাকেই একমাত্র মাপকাঠি হিসাবে না দেখার দাবি জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন। নতুন সংগঠনের দাবি, অভিজ্ঞতার পাশাপাশি মেধাকেও গুরুত্ব দেওয়া হোক।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*