রোজদিন ডেস্ক :- এবার মহিলা সাংবাদিককে হেনস্থা কাণ্ডে নিজের দলের (সিপিআইএম) শাস্তির মুখে পড়েছেন বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য। এবার তাঁর পাশে দাঁড়ালেন সিপিএম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। জানালেন, ‘এটা বৃহত্তর ষড়যন্ত্র। তন্ময়বাবু যদি সত্যি অপরাধ করে থাকেন, তাহলে তিনি শাস্তি পাবেন’। পাশাপাশি একটি সংবাদমাধ্যমকে সিপিএমের আইনজীবী নেতা আরও জানালেন, এই পরিস্থিতিতে তন্ময়ের কী করা উচিত আর কী নয়! তাঁর কথায়, তন্ময়ের ঘটনা বৃহত্তর ষড়যন্ত্র। তবে তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন যাতে তন্ময় ভট্টাচার্য এটা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের বেশি মুখোমুখি না হয়। তাঁকে এটা বুঝতে হবে যে, এটা বৃহত্তর ষড়যন্ত্র। এটা নিয়ে তিনি যতই মুখ খুলবেন ততই পাঁকে আটকে যাবেন। অর্থাৎ তিনি যা বলবেন, সেটাই পাবলিক হয়ে যাবে। আরও বেশি জল্পনা তৈরি হবে। তন্ময় একজন দলের অতি পরিচিত নেতা। তাই দল ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে তন্ময়ের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কিন্তু তিনি অপরাধ করলে শাস্তি পাবেন। যদিও তন্ময় পুলিশি তদন্তে সহযোগিতা করছেন তিনি এড়িয়ে যাননি।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছিলেন একজন মহিলা সাংবাদিক। যিনি নিজের ফেসবুক পেইজ থেকেই ৮ মিনিট ২৮ সেকেন্ডের একটি লাইভ করেন। যেখানে মহিলা সাংবাদিক দাবি করেছিলেন যে, ‘সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যের সাক্ষাৎকার নিতে গিয়েছিলাম, সেই সময় সিপিএম নেতা আমার কোলে বসে পড়েন। শুধু তাই নয় যখন তিনি আমার কোলে বসে পড়েন আমি তখনই বলি, এরকম করবেন না। এগুলো আমি পছন্দ করি না। আপনি ইয়ার্কি করেছেন আমি মানছি, কিন্তু এরকম আমার সঙ্গে করবেন না। তাও তিনি আমার কোলে বসে পড়েন। তবে সেই সময় ক্যামেরাটা অন থাকলে খুবই ভাল হত। যদিও বরাবরই নিজের মাত্রার বাইরে গিয়ে ইয়ার্কি- ঠাট্টা করেন তন্ময় ভট্টাচার্য। পছন্দ না হলেও বিষয়টাকে নিজের মতো করে এড়িয়ে যেতাম। তবে আজ মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে ফেসবুকে লাইভ করছি।’
ভিডিওটি ইতিমধ্যেই ফেসবুকে ঝড়ের বেগে ভাইরাল হচ্ছে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ধিক্কার জানিয়েছেন একাধিক তৃণমূল নেতা। মহিলা সাংবাদিকের শ্লীলতাহানির অভিযোগে সিপিএম থেকে সাসপেন্ডও করা হয় তন্ময় ভট্টাচার্যকে। সিপিএম নেতার এমন কাণ্ডে রীতিমতো হতবাক অনেকেই। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন শাসক দলের একাধিক নেতাও। এছাড়া তন্ময় ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে ওই মহিলা সাংবাদিক বরানগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পরে এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তন্ময় ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ‘ভদ্রমহিলার ওজন ৪০ কেজির বেশি নয়। আমার ওজন ৮৩ কেজি। একজন পুরুষ মানুষ যদি ৪০ কেজি ওজনের এক মহিলার কোলে বসে পড়েন, তা হলে কি ওই মহিলাটি সুস্থ থাকতেন? পরিকল্পিতভাবে কুৎসা রটানো হয়েছে। ওইদিন ভদ্রমহিলা আমার বাড়ি থেকে বেরিয়েছেন প্রায় ১০টা ৪০ মিনিট নাগাদ। আর যে সময়ে এই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করা হচ্ছে তার পরে মেয়েটি প্রায় ২৫ মিনিট আমার সাক্ষাৎকার নিয়েছে। তারপর আমার বাড়ি থেকে বেরিয়ে মেয়েটি সল্টলেকে একজনের সাক্ষাৎকার নিতে যায়। ওই সাক্ষাৎকার নিয়ে আমাদের দু’জনের মধ্যেও কথা হয়েছিল। যদি ও এতটাই মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হত তাহলে তাঁর পক্ষে কি এত কাজ করা সম্ভব?’ সুতরাং ওই মহিলার সাংবাদিকের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তন্ময় ভট্টাচার্য। এর পিছনে কোনও ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা করেছেন সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা।
Be the first to comment