কানাডায় হিন্দুদের উপর হামলার তীব্র নিন্দা জানালেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী, নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারতীয় হাই কমিশনের

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক :- কানাডায় হিন্দু মন্দিরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল খলিস্তানপন্থী লোকজনদের বিরুদ্ধে। সোমবার এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানালেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এই ঘটনা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে জানিয়ে দিলেন তিনি। এনিয়ে মুখ খুলল দিল্লি।

অভিযোগ ওঠে, খলিস্তানপন্থী লোকজন কানাডার অন্টারিওর ব্র্যাম্পটন হিন্দু মন্দিরের সামনে শিখ বিরোধী আন্দোলনের প্রতিবাদে অবস্থানে বসে। তাদের পেরিয়ে ভক্তরা মন্দিকে ঢুকতে গেলে বচসা হয়। তারপরই তাদের ওপর হামলা চালায় খলিস্থানিরা। এই সংক্রান্ত একটি ভিডিও ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়, যাতে দেখা যায়, খলিস্থানপন্থী পতাকা নিয়ে কয়েকজন একটা কোথাও ঢুকে মারধর চালাচ্ছে। পতাকার লাঠি দিয়ে মারতে দেখা যায়। এক মহিলার চিৎকারও শোনা যায়।
জানা গিয়েছে, এই ঘটনার সময় এই মন্দিরের অদূরেই ভারতীয় উপদূতাবাসের তরফে একটি শিবির চলছিল। কানাডায় থাকা ভারতীয়দের সুবিধা-অসুবিধার বিষয় খতিয়ে দেখতে ওই শিবির খোলা হয়েছিল। সেখানেও খলিস্তানিরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। হামলার ঘটনা সামনে আসতেই সরব হয়েছে কানাডার ভারতীয় দূতাবাস। শিবিরে যোগ দেওয়া ভারতীয়দের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তারা।
এদিকে, এখানেই রয়েছে ৫৫ ফুটের বিখ্যাত হনুমান মূর্তি। যা নিয়ে গতবছর ডিসেম্বর মাসে একাধিক কথা ওঠে। অনেকেই এই মূর্তির বিরোধিতা করেছিলেন বলে জানা যায়। তবে, সেসময় মন্দিরের পুরোহিত জানিয়েছিলেন, তাঁরা নিরাপদ রয়েছেন। এই ঘটনার পর ওই মূর্তি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
এদিকে, খলিস্তানপন্থীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে জাস্টিন ট্রুডোর বিরুদ্ধে। কিন্তু ব্র্যাম্পটনে এই ঘটনা সামনে আসতেই মাঠে নামে তিনি। এই ধরনের ঘটনা কোনওভাবেই বর্দাস্ত করা হবে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান।
ব্র্যাম্পটনের মেয়র প্যাট্রিক ব্রাউনও ঘটনার নিন্দা জানান, অপরাধীদের কঠোরতম শাস্তির দাবি করেন। এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা কানাডার ভিত্তি। যে যেখানেই পূজার্চনা করুক, সেখানে তার যেন নিরাপত্তা থাকে।’


এই নিয়ে ভারতে নিন্দার ঝড় উঠেছে তো বটেই, ট্রুডো সরকারকে ভৎর্সনা করতে ছাড়েনি সেখানকার বিরোধীরা। কানাডার বিরোধী দলনেতা পিয়ার পয়লিভার বলেন, দেশে যা অচলাবস্থা চলছে তার দ্রুত সমাধান প্রয়োজন। সেই সমাধানের পর মানুষকে একত্র করতে হবে। টরেন্টোর সাংসদ কেভিন বলেন, ‘খ্রিষ্টান বা অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের যেভাবে সুরক্ষা প্রদান করে থাকে আমাদের নেতারা, হিন্দুদের দিতে পারছে না। শান্তিতে প্রার্থনা করা আমাদের অধিকার।’
খলিস্তানপন্থীদের নানারকম ভারত বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ বহুদিন ধরেই উঠেছে কানাডায়। ভারত সরকারও বহুবার এই নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছে কানাডার বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগও উঠেছে, সে দেশের সরকার যথেষ্ট কড়া হাতে দমন করছে না এই বিরোধিতা।
খলিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরের মৃত্যুর পর থেকেই ভারত-কানাডার মধ্যে সম্পর্কে অবনতি হয়। অপারেশন ব্লু স্টারের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুদৃশ্য নিয়েও ট্যাবলো বের করেছিল খলিস্তানিরা। কানাডার নানা প্রান্তে সেঁটে দিয়েছিল ‘কিল ইন্ডিয়া’পোস্টার। গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর ভারতীয় দূতাবাসে আগুন লাগিয়ে দেয় খলিস্তানপন্থীরা।
সম্প্রতি সেই সব প্রসঙ্গে ফের কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়। দুই দেশের তরফেই আধিকারিকদের প্রত্যাহার থেকে শুরু করে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়। তার মধ্যেই এই ঘটনা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহল মহল।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*