রোজদিন ডেস্ক :- সাতসকালেই ভারি বুটের আওয়াজে কেঁপে উঠলো কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। গোটা মেমোরিয়াল গ্রাউন্ড ঘিরে ফেলল সেনা কমান্ডো। বন্ধ করে দেওয়া হল টিকিট কাউন্টার, দ্রুত খালি করা হয় ভিক্টোরিয়া।
হঠাৎ কেন বন্ধ হল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের টিকিট কাউন্টারের ঝাঁপ? জঙ্গি আক্রমণ? বোমাতমঙ্ক? না কি অন্য কোনও বিপদ? কোনো কিছু বোঝার আগেই ভারী বুটের শব্দ! ভিক্টোরিয়ার মাঠের সাউথ গেট দিয়ে ঢুকল সেনা। বাইরে পজিশন নিল সিআইএসএফ! অপারেশনে অংশ নিয়েছিল ভারতীয় নৌসেনা, এবং ভিক্টোরিয়া ম্যানেজমেন্টও
ভিতর থেকে বাইরের কন্ট্রোল ওয়াকিতে খবর এল– এক ভিআইপি প্রাতঃভ্রমণকারীকে ঘিরে ফেলেছে ৮ জঙ্গি! সঙ্গে সঙ্গে শুরু হল অপারেশন। সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে ১০ টা। এই আধ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস অপারেশন। তারপর নিউট্রালাইজ করা হল সব জঙ্গিকে। নাছোড় দুই জঙ্গি একটি শ্বেতপাথরের মূর্তির আড়ালে তখনও এমনভাবে লুকিয়ে, যে, সেখানে পৌঁছনোই যাচ্ছিল না। শেষে সাপের মতো সন্তর্পণে মাটি কামড়ে তার দিকে ক্রমশ এগিয়ে গেলেন দুই সেনা জওয়ান। অবশেষে তাদেরও নতি স্বীকারে বাধ্য করা হল। না, আসলে ঘটনাটা মোটেই এমন কিছু নয়। গোটা ব্যাপারটাই ছিল একটা মক ড্রিল বা মহড়া। সেই খবর আসতেই ফিরল স্বস্তি। জানা গিয়েছে, আর্মি, নেভি এবং সিআইএসএফ যৌথ ভাবে চালাল এই মহড়া।
গত দুদিন ধরে শহরে চলছে ‘সি-ভিজিল ২০২৪’। জলপথে জেহাদ ঠেকানোর মহড়া। এদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ভিক্টোরিয়ার সাউথ গেটে চলে এই মহড়া।
উল্লেখ, বুধবার রাতে নেতাজি সুভাষ নৌসেনা ঘাঁটিতেও চালানো হয় এই মহড়া। একদল রাতের অন্ধকারে নৌসেনা ঘাঁটির পিছনে রেললাইনে বোমা রাখার চেষ্টা করে। সেই চেষ্টা রুখে দেওয়ার মহড়াও হয়।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছরে একাধিক প্রাণঘাতী হামলার সাক্ষী থেকেছে ভারত। জানা যায়, জলপথেই জঙ্গিরা পাকিস্তান থেকে প্রবেশ করে ভারতে। এবার সেই ভারতীয় জলপথকেই আরও দুর্গম করে তুলতে এবার নয়া উদ্যোগ নিচ্ছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। জানা গিয়েছে, উপকূলবর্তী এলাকা এমনকি ভারতীয় সমুদ্রসীমার দূরবর্তী স্থানেও নিরাপত্তা বলয় তৈরির চেষ্টা করছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। জলপথে এই দুর্ভেদ্য দুর্গ তৈরির একটি অংশ ‘সি- ভিজিল ২০২৪’।
দেশজুড়ে আগামী ২০ এবং ২১ নভেম্বর হলো এই বিশেষ মহড়া। ২০১৯ সাল থেকে এই মহড়া শুরু হয়েছিল ভারতীয় সেনার মধ্যে। এবার তা চতুর্থ বছরে পা দিল। চতুর্থ বর্ষে অভূতপূর্ব ব্যবস্থাপনা থাকছে নৌবাহিনীর তরফে। উপকূলবর্তী অঞ্চল এবং দ্বীপগুলিতে দেশের মোট ৬টি মন্ত্রক ও ২১টি সংস্থা যুক্ত থাকছে এই প্রচেষ্টায়। জলপথে নৌকা ছিনতাই করে সন্ত্রাসবাদীদের প্রবেশ কিংবা উপকূলবর্তী অঞ্চলে ছদ্মবেশে হানা দেওয়া এই সবকিছুকে ব্যর্থ করে দিতে বদ্ধপরিকর ভারতীয় নৌবাহিনী। কীভাবে সেই হামলার মোকাবিলা করা হবে, তারই রূপরেখা তৈরি হয় এই মহড়া গুলোর মধ্যে দিয়ে।
Be the first to comment