পিয়ালি আচার্য, কলকাতা :– INS সাবিত্রী ( P-53) ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধ-জাহাজ। শুনে শিহরণ জাগছে! শুধু শুনে লাভ কি, নিজেরা আসুন, জাহাজে চড়ুন, শরিক হন রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার। ভাবছেন কি ভাবে? খিদিরপুর ডক এর ৩ নম্বর গেট দিয়ে ঢুকুন, নিজের আধার কার্ড বা যেকোনো সরকারি সচিত্র পরিচয় পত্র দেখান, তারপরেই সোজা উঠে যান এই ভারতীয় নৌ বাহিনীর সুকন্যা শ্রেণীর টহল জাহাজে। ইস্টার্ন ন্যাভাল কমান্ডের ( বিশাখাপট্টনাম) এই জাহাজটি মুম্বাইয়ের মাজাগাও ডকে সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি পেট্রোলিং ভেসেল।৩৪ বছরের পুরোনো এই যুদ্ধ জাহাজটি ২৩ নভেম্বর এসে পৌঁছেছে কলকাতায়।
৪ ডিসেম্বর ভারতীয় নৌ বাহিনী দিবস। এবার পুরীতে রাষ্ট্রপতির উপস্থিতিতে পালিত হচ্ছে এই অনুষ্ঠান। তারই প্রাক্কালে INS সাবিত্রীকে নিয়ে আসা খিদিরপুর ডকে। আপনারা হয়তো ভাবছেন কি আছে এই জাহাজে! খুঁটিয়ে দেখলে বিস্মিত হতে হয়।হেলিপ্যাড থেকে বোফোর্স কামান সব ব্যবস্থাই আছে এখানে। উপকূলীয় ও সামুদ্রিক সুরক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ এই জাহাজ। কমান্ডার বিজয় ঝা ও তার টিম দক্ষ হাতে এই জাহাজ পরিচালনা করেন।
রবিবার ২৪.১১.২৪ সকাল ঠিক ১০ টায় জাহাজে কমান্ডার বিজয় ঝা ন্যাভাল অফিসার ইনচার্জ ওয়েস্ট বেঙ্গল কমোডর অজয় যাদবের সঙ্গে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন। যেহেতু জাহাজের মূল পরিচালক কমান্ডার ঝা তাই তাঁকে জাহাজ টির আভ্যন্তরীণ বিষয়ে নানা রকম প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। কমোডর যাদব নৌ বাহিনী দিবসের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন। তাঁরা মনে করিয়ে দেন ১৯৭১ সালে যুদ্ধে ভারতীয় নৌ বাহিনী বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিল।
৪ ডিসেম্বর অপারেশন ট্রাইডেন্ট এর মাধ্যমে ৪টি পাকিস্তানি ভেসেল এর ওপর আক্রমণ চালিয়ে পাকিস্তানি নৌ বাহিনকে শুধু পরাস্ত নয় রীতিমতো নাকানি চোবানি খাওয়ায়। ৭১ এর এই যুদ্ধের পরে নতুন দেশ বাংলাদেশ জন্ম নেয়। তাই ৪ ডিসেম্বর এই গুরুত্বপূর্ণ দিনটিকে ৭১ এর যুদ্ধের পর থেকে ভারতীয় নৌবাহিনী দিবস হিসাবে পালন করা হয়। ইন্দো পাক যুদ্ধে মৃত সৈনিকদেরও এই দিনটিতে স্মরণ করা হয়।
নেভির গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বোঝাতেই এই যুদ্ধ জাহাজ টিকে সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে জানালেন উইং কমান্ডারর হিমাংশু তিওয়ারি (CPRO MINISTRY OF DEFENCE EASTERN COMAND)। তিনি আরো জানান ভিজিটর দের জন্য এটি খোলা থাকছে ২৪ তারিখ সকাল ৯টা থেকে ২টো পর্যন্ত। ২৫-২৬ নভেম্বর এটি খোলা থাকবে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪ টে পর্যন্ত। উপস্থিত দর্শকরা বলেন এটা অত্যন্ত দুর্লভ সুযোগ এতদিন যুদ্ধের কথা বইয়ের পাতায় অথবা ভিজুয়াল ক্লিপিং এ দেখেছি আজ সশরীরে যুদ্ধ জাহাজ দেখার সুযোগ পেলাম। বিশেষ করে কচি কাঁচারা যুদ্ধ জাহাজ দেখে রীতিমতো উত্তেজিত হয়ে পড়ে। অনেকে বলে তারা নেভি কে কেরিয়ার হিসাবে গ্রহণ করতে চায়। এক প্রাপ্ত বয়স্ক দর্শক বলেন সমুদ্র পাহারায় অতন্দ্র প্রহরী যাঁরা ( নারী পুরুষ নির্বিশেষে) তাঁদের জানাই কুর্নিশ।
Be the first to comment