দীপক আঢ্য:
ইনসিওরেন্সের প্রিমিয়ামের জন্য ফোন করেছিলাম রমাদিকে। রমাদির কথা মতো সন্ধ্যেবেলা ওনার বাড়ি গেলে একটা দশ হাজার আর একটা ন’ হাজার টাকার দুটো আলাদা ব্যাঙ্কের চেক সই করে দিলেন। প্রাপকের নাম লিখলেন না।
আমি বললাম, ‘ওখানে ইনসিওরেন্স কোম্পানির নাম লিখে দিন।’
-ওসব তুমি লিখে নিও। এই টুকু যদি বিশ্বাস না থাকে তাহলে বেঁচে থাকাই দায়!
চেকটা হাতে নিয়ে বললাম, ‘বেশ, আমি তাহলে এখন চলি। একটু তাড়া আছে। পরে লিখে নেব।’
একটা বইয়ের মধ্যে চেক দুটো রেখে মনে মনে ভাবলাম, কাজ বাড়ল। ক্যাশ ডিপার্টমেন্ট একটা সিংগিল প্রিমিয়ামের জন্যে দুটো চেক দিলে বড্ড খ্যাচখ্যাচ করবে। তার থেকে নিজের নামে চেকটা ব্যাঙ্ক থেকে ভাঙিয়ে ক্যাশেই জমা দেব।
আমার ভাবনা ওখানেই শেষ। কয়েক দিন পরে হঠাৎ খেয়াল হল ,আগামিকাল লাস্ট ডেট প্রিমিয়াম জমা দেওয়ার। তাড়াতাড়ি ফোলিও ব্যাগে হাত দিলাম। কিন্তু একি! চেক দুটো ওখানে নেই। আলমারি, ড্রয়ার, ব্যাগ, সব খোঁজা হল কিন্তু চেকের কোন হদিশ পেলাম না।
মাথা শান্ত করে ভাবতে লাগলাম কোথায় যেতে পারে চেক দুটো। ভাবতে ভাবতে হঠাৎ মনে পড়ল। সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা হয়ে গেল শরীর।
রমাদিকে ফোন করলাম, ‘ব্যাঙ্ক থেকে কোন এসএমএস পেয়েছেন? ওই চেক দুটোর টাকা উইথড্রল সংক্রান্ত।’
-না তো।
দুটো ছেঁদো কথা বলে ফোনটা কেটে দিলাম। দ্রুত ছুটলাম সাধারণ পাঠাগারে। লাইব্রেরিয়ানকে বললাম, ‘গত পরশু যে বইটা ফেরত দিয়েছিলাম…’মুহূর্তে নজরে পড়ল, ‘ওই তো … ওই অমনিবাসটা … হ্যাঁ, ওটা। ওটা একবার দিন।’
বইয়ের প্রায় মাঝখানে নির্ভাঁজ হয়ে চেক দুটো ঘুমুচ্ছে এখনও।
Be the first to comment