নারী দিবসের প্রয়োজনীয়তা আছে কি? কি বলছেন বিশিষ্ট মহিলারা

Spread the love

 

মহুয়া মৈত্র, বিধায়ক, তৃণমূল কংগ্রেস

মহুয়া মৈত্র শিক্ষিত, সপ্রতিভ, সুবক্তা। তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক তিনি। অনেকে বলেন এলিট প্লাসের প্রতিনিধি। মহুয়ার পড়াশোনা বিদেশে। বিদেশে থেকে কাজ করার অভিজ্ঞতাও আছে। কিন্তু বাংলার রাজনীতিতে প্রবেশের পর এহেন মহুয়া চষে বেড়িয়েছেন গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। প্রথমে কংগ্রেস তারপর তৃণমূল কংগ্রেসের বিশ্বস্ত সৈনিক। তার নির্বাচনী কেন্দ্র নদিয়ার করিমপুর। ২০১৬ সালে বিধায়ক হন তিনি। প্রান্তিক মানুষের চাহিদার কথা বুঝতে নির্বাচনী কেন্দ্রের কোণায় কোণায় ঘুরেছেন তিনি। লড়াকু মহুয়া জেদি ও পরিশ্রমী। বিধানসভার অধিবেশনে প্রথমে ইংরাজিতে বলতেন মহুয়া, যে ভাষায় তিনি সাবলীল ও স্বচ্ছন্দ। কিন্তু বিরোধীদের টিকা-টিপ্পনীতে চ্যালেঞ্জ নেন বাংলা বলার এবং এক্ষেত্রে প্রায় সফল বলা যায়। নোট বন্দি হোক বা কেন্দ্রিয় বঞ্চনা বা বাজেট অথবা গুজরাট ভোট বিধান সভার ভেতরে-বাইরে, টিভি চ্যানেলে, বক্তৃতা মঞ্চে মহুয়া তার দক্ষতার পরিচয় রেখেছেন।

মহুয়া সম্বন্ধে Melinda Gates এর এই উক্তিটি ভালো খাপ খায় – ‘A woman with a voice is, by definition, a strong woman’

নারীদিবস নিয়ে মহুয়ার বক্তব্য হল, অবশ্যই এই দিবস পালনের প্রয়োজনীয়তা আছে। এখনো আমরা কার্যত পুরুষতন্ত্রে আছি। তোমার আমার জন্য হয়তো এই দিনটা ইম্পর্ট্যান্ট নাও হতে পারে। কিন্তু আমরা যদি গ্রামে যাই তাহলে দেখি মানুষের অধিকার তার সমতা পুরুষের সমান নয়। এ নিয়ে আমাদের লড়াই চলছে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেয়েদের জন্য বেশ কিছু প্রকল্প করেছেন, তাছাড়া সেল্ফ হেল্প ও গ্রুপগুলোতেও মেয়েদের অংশগ্রহণ তাকে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দিচ্ছে। খুব অল্প উপার্জন হলেও মেয়েদের অবশ্যই অর্থনৈতিক ভাবে স্বাধীন হওয়া প্রয়োজন, যদি নিরাপত্তার প্রশ্ন টানেন তাহলে বলবো পশ্চিমবঙ্গ’র মতো নিরাপদ জায়গা দেশে আর কোথাও নেই। নারীজাতিকে আমরা মাতৃরূপে পূজা করি, সেটাই আমাদের বাংলার প্রধান উৎসব। বাকি দিনগুলো যেন একই সম্মান আমরা মহিলাদের দিতে পারি সেই লক্ষ্যেই আমারা এগিয়ে চলেছি।

আমরা যদি লাইফ স্টাইলের দিকে চোখ রাখি তাহলে সহজেই বুঝতে পারি ২৫-৩০ বছর আগে যা ভাবা যেত না, মেয়েরা এখন ইজিলি তাই করছে। পঞ্চায়েতেও মহিলা সংরক্ষণ হয়েছে। অনেকে ঠাট্টা মসকরা করেন মেয়েটি তো কিছুই করতে পারে না, তার স্বামীই সব চালায় কিন্তু এ কথা বলবো ঐ গ্রাম প্রধানের ছেলে বা মেয়ে যখন বড় হচ্ছে তারা তাদের মাকে ক্ষমতার, সিদ্ধান্ত গ্রহণের কেন্দ্রবিন্দুতে দেখছে। তারাও তখন নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে। এভাবেই সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়। গ্রামাঞ্চলে আমরা যখন দেখি একটি কমবয়সি মেয়ে মা-বাবার, সমাজ-সংসারের ভয়কে তুচ্ছ করে রুখে দিচ্ছে বিয়ে তখন তো তাকে স্যালুট জানাতেই হয়। গ্রামে মেয়েদের শিক্ষার হারও ভীষণভাবে বেড়েছে। সুতরাং মহিলা দিবস পালনের যৌক্তিকতা আছে বৈকি। আজ আমাদের শপথ নেওয়ার দিন। আমি বলি ‘Today we should take an oath that we women should celebrate our lives, our aspirations, our dreams every other day of the year. There is nothing we cannot do if we believe we can.’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*