সিপিএমের বৃদ্ধতন্ত্রের শেষ হয়েও হলো না শেষ

Spread the love

পার্টির বিশ্বাসযোগ্যতা তলানিতে। বিভিন্ন নির্বাচনে হার, হারের বিশ্লেষণও হয়। নতুন উদ্যমে কাজ করাও শুরু হয় কিন্তু ফল হয় জিরো। পার্টিকে বাঁচাতে গেলে নেতৃত্বে নতুন প্রজন্মকে আনতে হবে। এইরকমই মতামত বেশ কিছু মানুষের। তাই রাজ্য কমিটি থেকে বৃদ্ধদের বাদ দিলো বাংলার সিপিএম। ভাবলে অবাক হতে হয় যারা বাদ পড়েছেন তারাই একসময় বামফ্রন্ট সরকারের মুখ ছিলেন। যেমন ধরা যাক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্য। বুদ্ধদেববাবু অবশ্য অনেকদিন থেকেই অসুস্থতার কারণে সরে দাঁড়াতে চাইছিলেন। সীতারাম ইয়েচুরি, সূর্যকান্ত মিশ্র বহুবার বুদ্ধবাবুকে অনুরোধ করেন থেকে যাওয়ার জন্য কিন্তু বুদ্ধবাবু তাঁর বক্তব্যে দৃঢ়। এছাড়া শ্যামল চক্রবর্তী, মদন ঘোষ, দিপক সরকার, অসীম দাশগুপ্ত, নিরূপম সেন, কান্তি গাঙ্গুলি, বাসুদেব আচারিয়া বাদ পড়লেন। এঁদের সবার বয়স ৭৫এর উপর। এছাড়া অনেকেই পুরোপুরি সুস্থ নন। তাই দলের স্বার্থে ওঁদের পার্টির রাজ্য কমিটি থেকে সরানো হলো বলে জানান সিপিএম নেতৃত্ব। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো এই আটজনকেই পার্টির আমন্ত্রিত সদস্য হিসাবে রাখা হয়েছে অর্থাৎ বৃদ্ধতন্ত্রের শেষ হয়েও হলো না শেষ।
সিপিএম নেতৃত্বের অবশ্য বক্তব্য সব মিলিয়ে ২০জন প্রবীণ নেতাকে রাজ্য কমিটি থেকে বাদ দিয়েছেন তাঁরা। একমাত্র বুদ্ধদেব বাবুকেই বারবার অনুরোধ করা হয়েছিল থেকে যাবার। কিন্তু সূত্রের খবর, বাকিদের কেউ থাকার জন্য অনুরোধ করেননি। ৮০ জনের রাজ্য কমিটিতে নতুন মুখ ১৭ জন। দলকে চাঙ্গা করতে তরুণ প্রজন্মকে আনার নিয়ম জেলা বা এরিয়া কমিটিতেও চালু হবে জানান সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। রাজ্য কমিটিতে নতুন মুখের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মধুজা সেনরায়, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, জামির মোল্লা, কল্লোল মজুমদার প্রমুখ। সূর্যবাবু একথা জানান, ৭৫ বয়সের বেশি বা অসুস্থ কাউকে রাজ্য কমিটিতে রাখা হবে না। এর ব্যতিক্রম অবশ্যই বিমান বসু। বয়স ৭৯ হলেও এখনও রাজ্যের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত চষে বেড়ান, হাঁটেন মিছিলে। সূর্যবাবুর কথায় ‘এখনও তিনি পার্টির তরুণ নেতাদের মত নিয়মিত মিছিল মিটিং করেন’। অতএব বিমান বাবু থাকলেন রাজ্য কমিটিতে। গৌতম দেবকে নিয়ে একটা জল্পনা তৈরী হলেও তাঁকেও রেখে দেওয়া হয় রাজ্য কমিটিতে। ৮০ জনের নতুন রাজ্য কমিটিতে ১২ জন মহিলা। প্রসঙ্গত গত ৪ দিন ধরে সিপিএম-এর রাজ্য সম্মেলন হলো। আগামী পঞ্চায়েত ভোটই ছিল আলোচ্য বিষয়বস্তু। আলোচনায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করার প্রসঙ্গটি ওঠে এবং পরে সূর্যকান্ত মিশ্র এ বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেননি।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*