কলকাতাঃ নার্সদের কোলে পিঠে করে মানুষ হচ্ছে মিনু। জন্মের পর তার শরীরে টিউমার দেখে হাসপাতালের গাইনো বিভাগে ফেলে গিয়েছিলো এই শিশুটির মা মিনু বেগম। এখন শিশুকন্যাটির বয়স ৫ মাস। মায়ের নাম অনুসারে তাকে এখন হাসপাতালের নার্স ও ডাক্তার মিনু বলেই ডাকে।
মিনু বেগম কলকাতা মেডিক্যল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। এর পর গাইনো বিভাগে তিনি একটি শিশুকন্যার জন্ম দেন। জন্মের পর থেকে শিশুকন্যাটির শিরদাঁড়ায় একটা টিউমার দেখা যায়। তা দেখে তিনি গাইনো বিভাগে শিশুটিকে রেখে হঠাৎ পালিয়ে যান। এর পর হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের-এর তরফে মিনু বেগমকে খোঁজার চেষ্টা করা হলেও এখনও পরিবারের কোনও হদিশ পাওয়া যায় নি। পরে অস্ত্রোপচারে এই টিউমারে ক্যান্সারের টিসু মেলে। এই ক্যান্সারটিকে চিকিৎসার ভাষায় বলে “সাইমোটো”।
মেডিক্যল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তিন বার জানায়। পুলিশ ১০ দিন বাদ দিয়ে তিন বার তার মায়ের সন্ধানে যায়। কিন্তু তার মায়ের কোনও হদিশ পাওয়া যায় নি। এর পর সুপারের অনুমতি নিয়ে শিশুকন্যাটির ওটি করা হয়। কিন্তু ওটি করার পর শিশুকন্যাটির ক্যান্সার হয়। এই ক্যান্সারটি একেবারে বিরল। তার পর সরকারি ভাবে একাধিক পরীক্ষা করা হয়। সিটিস্ক্যান করা হয়। এখন তাকে কেমথেরাপিও করা হচ্ছে। এখন ২ বছর তাকে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের প্রধান সুকান্ত দাস বলেন, “এটা একটা বিরল অস্ত্রোপচার। কিন্তু এই অস্ত্রোপচার পুরোপুরি সফল। এখন শিশু কন্যাটি ভালো আছে। তাকে জেনারেল বেডে দেওয়ায় হয়েছে। এই শিশু কন্যাটিকে নার্সরা যেখানে বসে সেইখানে তাকে তারা রেখেছে। তাকে কোলে পিঠে করে মানুষ করছে। নার্সরাই তাকে খাবার খাওয়ানো ঔষধ সব কিছু করেন। আর এক প্রকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগেই বড় হচ্ছে এই শিশুকন্যাটি।
Be the first to comment