বিশ্ব জল দিবস

Spread the love

তপন মল্লিক চৌধুরী

১৯৯৩ সালে জাতিসংঘ সাধারণ সভা ২২ মার্চ তারিখটিকে বিশ্ব জল দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে জাতিসংঘ পরিবেশ ও উন্নয়ন সম্মেলনের (ইউএনসিইডি) এজেন্ডা ২১-এ প্রথম বিশ্ব জল দিবস পালনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবটি উত্থাপিত হয়। ১৯৯৩ সালে প্রথম বিশ্ব জল দিবস পালিত হয় এবং তার পর থেকে এই দিবস পালনের গুরুত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে। জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলি এই দিনটিকে নিজের দেশে জাতিসংঘের জলসম্পদ সংক্রান্ত সুপারিশ ও উন্নয়ন প্রস্তাবগুলিকে মনোনিবেশের দিন হিসেবে উৎসর্গ করেন। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলির পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও পরিচ্ছন্ন জল ও জলসম্পদ রক্ষা সম্পর্কে জনসচেতনতা গড়ে তোলার জন্য এই দিনটিতে বিশেষ কর্মসূচির আয়োজন করেন। ২০০৩, ২০০৬ ও ২০০৯ সালে জাতিসংঘের বিশ্ব জল উন্নয়ন প্রতিবেদনটি বিশ্ব জল দিবসেই প্রকাশ করা হয়েছিল। ২০১৫ সালের বিশ্ব জল দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল—জলের সহজ প্রাপ্তি, টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি ৷

এ বছর বিশ্ব জল দিবসের আগে ইউনেস্কো যে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে তাতে তুলে ধরা হয়েছে যে উন্নয়নের স্বার্থে ব্যাপক হারে গভীর নলকূপ ব্যবহার করায় ভারত নিজেই গভীর জলে ডুবে যাচ্ছে। যে অবস্থা ২০৫০ সালের মধ্যে দেশ জুড়ে একটি তীব্র জল সংকটের পূর্বাভাস দেয়।

আমাদের নদীগুলির অর্ধেকেরও বেশি দূষিত। গত পাঁচ বছরে সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড ১২১ থেকে ২৭৫ টি নদীকে ভীষণভাবে দূষিত আখ্যায়িত করেছে তার মানে’দূষিত’ নদীগুলোর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল দ্বিগুণ। রিপোর্টে একথাও পাওয়া যাচ্ছে যে, মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জেলের প্রায় ৪৯ টি নদী দূষিত, নদীগুলির মধ্যে রয়েছে, মিঠী, গোদাবরী, ভীম, কৃষ্ণ, উলহস, তাপী, কুণ্ডলিকা, পঞ্চগঙ্গা, মুলা-মুঠা, পেলহর, পেঙ্গাঙ্গা ও ভৈরতিনাসহ অন্যান্যরা দুষিত নদীর সংখ্যায় মহারাষ্ট্র রয়েছে একেবারে শীর্ষ স্থানে। আসাম রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে, সে রাজ্যের ২8টি নদীকে দূষিত বলে দেগে দেওয়া হয়েছে। এরপর একে একে উঠে এসেছে মধ্য প্রদেশ; সেখাঙ্কার ২১টি নদী দূষিত আখ্যা পেয়েছে।  গুজরাটের ২0 টি, এবং পশ্চিমবঙ্গ ১৭ টি নদী দূষণের আওতায় আছে বলে ওই রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে। দক্ষিণের পরিস্থিতি ভাল নয় সেখানে সবথেকে উল্লেখযোগ্য নদী গোদাবোরি, কাবেরি এবং কৃষ্ণাসহ বেশ কয়েকটি প্রধান নদীর জলের পরিমাণ খুব কম। বিশ্ব জল দিবসে এ ধরনের রিপোর্ট কেবল যে চিন্তার উদ্রেক করে তা তো নয়, কি হবে আগামী দিনের পরিস্থিতি? ওই অবস্থা কতখানি মোকাবিলা করতে পারব আমরা—এই প্রশ্ন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে বিশ্ব জল দিবসে।

 

 

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*