মৃত্যুর বদলা মৃত্যু নয়, চোখের বদলা চোখ নয়। গান্ধীজি বহু বছর আগে বলে গিয়েছেন একটা চোখের বদলে যদি আরেকটি চোখ নষ্ট করে দেওয়া হয় তাহলে সারা পৃথিবীটাই অন্ধকার হয়ে যাবে। ঠিক এমনই একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন আসানসোলের নুরানি মসজিদের ইমাম মৌলানা ইমদাদুল্লাহ্ রশিদি।
হারিয়েছেন পুত্রকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কী অসীম মানসিক শক্তি। তিনি চাননা তাঁর পুত্রের মৃত্যুর বদলা নিতে। অহিংসার এমন দৃষ্টান্ত খুবই কম দেখা যায়। সন্তান হারানোর শোক কী, তা যে পায় সেই বোঝে। এই শোকের অনেক উপরে উঠে তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। অহিংসার পথে ভালোবাসা দিয়ে যে মানুষের মন জয় করা যায় তাঁর এক উজ্জ্বল উদাহরণ হলেন পিতৃহারা ওই পিতা। ক্ষমা করে দেওয়া যে কতবড়ো গুন তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে সমাজকে প্রমান করিয়ে দিলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে একটি পোস্ট করেন তিনি। সেখানেই তিনি লেখেন, “আল্লাহ্ আমার সন্তানের যতদিন আয়ু রেখেছিলেন, ততদিন সে বেঁচেছে। আল্লাহ্-র ইচ্ছায় তার মৃত্যু হয়েছে। তাকে যারা হত্যা করেছে, আল্লাহ্ তাদের কেয়ামতের ময়দানে শাস্তি দেবেন। কিন্তু, আমার সন্তানের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়ার অধিকার আপনাদের কারও নেই। আমার সন্তানের মৃত্যুর জন্য একটিও মানুষের উপর আক্রমণ করা চলবে না। একটিও মানুষকে হত্যা করা যাবে না। বাড়িঘর, দোকানপাট ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ বা লুটপাট করা চলবে না।
মৌলানা ইমদাদুল্লাহ্ রশিদি এদিন আরও জানান, ইসলাম আমাদের নিরীহ কোনও মানুষকে হত্যা করতে শেখায় না। ইসলাম শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রেখে বসবাস করতে শেখায়। আসানসোলে আজ শান্তিশৃঙ্খলার প্রয়োজন। আপনারা যদি আমায় আপন মনে করেন, তাহলে ইসলাম নির্দেশিত শান্তি বজায় রাখবেন। শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব আপনাদের।
আর যদি আপনারা শান্তি বজায় রাখতে না পারেন, তাহলে ভাবব, আমি আপনাদের আপন নই। আমি আসানসোল ছেড়ে চিরতরে চলে যাব।”
Be the first to comment