শুক্রবারও তৃণমূল কংগ্রেস ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিজেপিকে একহাত নিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শুধু বিজেপিই নয়, এদিন বিরোধীদের উপর জমে থাকা সব রাগই যেন তিনি সাংবাদিকদের সামনে উগড়ে দিলেন। একদিকে যেমন উঠে এলো রাজ্যে বিজেপি-সিপিএম জোট প্রসঙ্গ, ঠিক তেমনই উঠে এলো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গও। বাদ যায়নি অমিত শাহ থেকে মুকুল রায় কেউই। অন্যদিকে এদিন বাসুদেব আচারিয়া প্রসঙ্গেও সরব হন পার্থ বাবু।
এখন দেখে নেওয়া যাক এদিন কী কী বিষয় উঠে এলো পার্থ বাবুর সাংবাদিক সম্মেলনে-
১. শুক্রবার বিজেপির প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে অমিত শাহ বিরোধীদের ইঁদুর, সাপ বলে কটাক্ষ করেছেন। আর সেই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব বলেন, মানুষই ঠিক করবে কে মানুষ, কে ইঁদুর আর কে সাপ। এরা ইতিহাস পড়ে না। জানেনা সিংহকে কে বাঁচিয়েছিলো? সেই ইঁদুরই। মানুষই ঠিক করবে কে ইঁদুর, কে সিংহ আর কে সাপ।
পাশাপাশি পার্থ বাবু এদিন আরও বলেন-
২. বিজেপি দলের স্বর্ণযুগ আসবে বলা হচ্ছিলো, আসলে দেশের কালো দিন আসবে। আমরা দেশের স্বর্ণযুগ আনার জন্য লড়াই করছি। আবারও বলি ২০১৯, বিজেপি হবে ফিনিশ। ভারতে তারপরেই স্বর্ণযুগের সূচনা হবে।
৩. কেউ কেউ পাগল উন্মাদের মতো কথা বলছে। বাংলার রাজনীতি, সংস্কৃতির গরিমা জানেনা বিজেপি। এসব করেও ওরা টিআরপি পাচ্ছে না। যে ভাষায় ওরা ধমকাচ্ছে, প্ররোচনা দিচ্ছে তাতে ওদের উন্মাদ ছাড়া কিছু বলা যায় না।
৪. বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনে জানিয়ে এসেছি, এরপর আমরা সঠিক জায়গায় জানাবো। পুলিশকে মারার কথা বলছেন, জনতাকে মারার কথা বলছেন। আর আমরা নাকি মনোনয়ন জমা দিতে দিচ্ছিনা। তাহলে কী ভুতেরা মনোনয়ন জমা দিচ্ছে?
৫. এইসব নিয়ে বিজেপি গান্ধী মূর্তির পাদদেশে এবং সিপিএম নির্বাচন কমিশনের সামনে ধর্না দিচ্ছে। নিজেদের প্রার্থী দেওয়ার ক্ষমতা নেই। কোমরে জোর নেই সংগঠনের, শুধু মুখেই মারিতং জগৎ।
৬. বিজেপি সিপিএমের সহযোগিতায় রাজ্যে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছে। বর্শার মধ্যে পতাকা, মোটা লাঠির মধ্যে পতাকা, অস্ত্রের মধ্যে পতাকার রাজনীতি সৃষ্টি করতে চাইছে বিজেপি।
৭. পঞ্চায়েতে আসন সংখ্যা, বুথ সংখ্যা না জেনে যে যার মতো মন্তব্য করে দিচ্ছে। বলা হচ্ছে অশান্তি করে ভোটের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এইসব বলে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হচ্ছে।
৮. দার্জিলিং থেকে যখন সেন্ট্রাল ফোর্স তুলে নেওয়া হলো তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে গিয়ে সেখানে শান্তি ফিরিয়েছেন। জঙ্গলমহলেও মুখ্যমন্ত্রী গিয়ে শান্তি ফিরিয়েছেন।
৯. আকাশ কুসুম স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে।
১০. বাসুদেব আচারিয়ার মার খাওয়া প্রসঙ্গে এদিন পার্থবাবু বলেন, হাটে নেমে পড়েছেন এখন। একসময় সংসদের নেতা ছিলেন। এতদিন কোথায় ছিলেন? দেখা যায়নি কখনও। দল হেরে গেছে তারপরও তো কখনও শুনি নি বাঁকুড়ার হয়ে তিনি কথা বলছেন। আজ দেখলাম বীরভূমের সাংসদ নেমে পড়েছেন পুরুলিয়ার কাশীপুরে। দল ক্ষমতায় নেই তাই হয়তো ওনাকে দেখা যায় না।
১১. পুলিশ প্রসঙ্গেও এদিন পার্থ বাবু জানান, আমি যখন বিরোধী দলনেতা ছিলাম, তখন পুলিশ সংস্কারের কথা আমি বলেছিলাম।
১২. যারা মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন তাঁরা সূর্য গোষ্ঠী না সুজন গোষ্ঠী? বিমান বাবুরা কী ভাবছেন, আমরা ২০টায় মনোনয়ন দেব আর ওরা ৮০ টায় দেবে?
১৩. মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে যে উদ্যোগ নিয়েছেন তাতে ভয় পেয়ে গেছে বিজেপি। বিজেপির বিরুদ্ধে আমরা সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করবো।
১৪. এছাড়াও এদিন মুকুল রায় প্রসঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, আপনার বুকে যদি পাটা থাকে তাহলে পুলিশ সরিয়ে দেখান। কেউ যদি পাঁঠা হন তাহলে আমার কী করার আছে? আসলে পাঁঠাদেরই তো বলি দেওয়া হয়। আগে বিজেপি ঠিক করুক কি করবে। ওদের দলে হাজারটা বিভাজন। আমাদের দল কী ভাবে চলবে আমরা দেখে নেবো।
Be the first to comment