ইংরেজি ২০১৮ তথা বাংলা ১৪২৪ সনে আনন্দ পুরস্কার পেলেন সন্তোষ রানা। ‘রাজনীতির এক জীবন’ বইয়ের জন্য এই পুরস্কার পেলেন প্রবীন এই রাজনীতিবিদ। শনিবার ওবেরয় গ্রান্ডে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রতিবছরের মতো এবারেও চাঁদের হাট বসেছিলো। আনন্দবাজার কতৃপক্ষ তো বটেই। ছিলেন শঙ্খ ঘোষ, জয় গোস্বামী, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। তবে সবার উপর যার নাম নেওয়া প্রয়োজন তিনি দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রনব মুখোপাধ্যায়। প্রনব বাবুই এদিন সন্তোষ বাবুর হাতে পুরস্কারটি তুলে দেন।
প্রনব বাবু এদিন তাঁর বক্তব্যে বলেন, রাজনীতিতে আমরা প্রায় সমসাময়িক। ১৯৬০-এর দশকে নকশালবাড়ির আন্দোলনের এক বিশিষ্ট নেতা ছিলেন সন্তোষ রানা। পাশাপাশি প্রনব বাবু জানান, আমাদের পথ-মত হয়তো আলাদা ছিল কিন্তু লক্ষ হয়তো কোনও জায়গায় এক। কারন আমরা দুজনেই মানুষের মঙ্গলের কথা চিন্তা করেছি। প্রনব বাবু আরও বলেন, সন্তোষ বাবু শ্রেণিহীন, শোষণহীন সমাজের স্বপ্ন দেখতেন। তাঁরা যে পথ অবলম্বন করেছিলেন তা হয়তো ঠিক ছিলো না। সন্তোষ বাবুর নিজের স্বীকারোক্তিতেই আছে মেদিনীপুর অঞ্চলে খতমের রাজনীতি সাধারন মানুষের থেকে আমাদের বিচ্ছিন্ন করেন।
প্রনব বাবু বলেন, তাঁর এই অকপট স্বীকারোক্তি তাঁর অকৃত্রিম সততার পরিচায়ক। সত্যিই তো নকশালবাড়ি ক্ষমতা দখলে, সমাজ পরিবর্তনে সফল হয়নি। তবে আজও কিছু মানুষ নীতিগত ভাবে এই মতের সমর্থক। অদ্ভুত মুন্সিয়ানায় প্রনব বাবু স্বাধীনতা আন্দোলনে বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তুলনা টানেন সন্তোষ বাবুদের আন্দোলনের। তিনি বলেন দেশের বিপ্লবী আন্দোলনও গণ সমর্থন পায়নি বলে ব্যর্থ হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বিশিষ্ট সাংবাদিক মালিনী চট্টোপাধ্যায়ের ‘ডু ও ডাই’ য়ের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
চট্টগ্রামে অস্ত্রাগার লুণ্ঠন, সূর্য সেনের বিপ্লবী আন্দোলন ততটা সফলতা লাভ করেনি কারন বিপুল সংখ্যক সাধারন মানুষকে তাঁরা জড়িত করতে পারেন নি। সন্তোষ বাবুর সততা, তাঁর রাজনীতি, তাঁর লেখনী, তাঁর মানবতাবাদ সবকিছুর প্রশংসা করলেও প্রনব বাবুর বক্তব্যের নির্যাস হল- ‘শান্তি’।
Be the first to comment